ইংরেজ আমলে জমিদার-তহসিলদার-জোতদার শ্রেণির উত্থান হয়। সাথে সাথে ইংরেজদের আদালতকে ঘিরে গড়ে উঠে মহুরি, পেশকার, উকিলের সহকারী প্রভৃতি কয়েকটি পেশা। এমনই একজন ছিলেন বাবুরাম বাবু। তার বিপুল বৈষয়িকতা; দিন-রাত শুধু অর্থের পেছনেই ছুটেছেন। কিন্তু এর মধ্যে তিনি তার একমাত্র পুত্রকে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে ভুলে যান। পিতার আদর ও ঔদাসীন্যে বাবুরামের একমাত্র পুত্রটি বখে যাওয়াকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। উপন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হচ্ছে মোকাজান মিয়া বা ঠকচাচা। তার পরামর্শে ও সাহায্যে বাবুরাম বাবু মিথ্যা মামলা জিতেন।
মতিলাল বাবুরামের একমাত্র পুত্র ও উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। সে আবাল্য কখনও ধর্মীয় ও নীতির শিক্ষা পায় নি। শিক্ষার ব্যাপারে তার পিতা ছিলেন উদাসীন। বেণীবাবু ও বেচারাম, যাদের উপর মতিলালের শিক্ষার দায়িত্ব দেওয়া ছিল, তারা শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হন। একসময় বাবুরামকে বেণীবাবু পুত্রকে শাসন করার ব্যাপারে উপদেশ দেন। কিন্তু তবুও বাবুরাম নির্বিকার থাকেন। পরবর্তীতে মতিলালকে বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়ে বাবা তার বিয়ের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তাতেও মতি ফেরে না মতিলালের। বাবার মৃত্যুর পর প্রাপ্ত সব সম্পত্তি সে নষ্ট করে ফেলে। চারদিকে অসৎ ও কুসঙ্গ নিয়ে মতিলাল পরিবেষ্টিত থাকে সর্বদা। তার মা-বোন তাকে ত্যাগ করে। একপর্যায়ে দুঃখের জীবনে প্রবেশ করলে তার বোধদয় ঘটে এবং হৃদয় মন পরিবর্তিত হয়। কাশী গিয়ে মতি ফেরে মতিলালের। সেখানে মা ও বোনের সাথে তার পুনর্মিলন মিলন হয়।