ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

Estimated Reading Time: 7 Minutes

সমাজসংস্কারক, লেখক

জন্ম: ১৮২০, মেদিনীপুর; মৃত্যু: ১৮৪১, কলকাতা।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একজন সমাজসংস্কারক ও লেখক। তার পৈতৃক পদবি বন্দ্যোপাধ্যায়, তবে স্বাক্ষর করতেন ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামে। তিনি ১৮৩৯ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে সংস্কৃত কলেজ থেকে “বিদ্যাসাগর” উপাধিতে ভূষিত হন। ১৮৪১ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান পণ্ডিত নিযুক্ত হন। ১৮৪৬ সালে সংস্কৃত কলেজে যোগদান করেন এবং এ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসরে যান। তিনি বাংলা গদ্যে প্রথম যতি বা বিরামচিহ্নের ব্যবহার করেন। এতে বাংলা গদ্যে আরও অর্থবহ হয়ে ওঠে। তাকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। এছাড়া তিনি বিধবা বিবাহ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়। তিনি নিজ পুত্র নারায়নচন্দ্রের সাথে ভবসুন্দরী দেবী নামক এক বিধবার বিবাহ দেন।

ছদ্মনাম: কদাচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য
সম্পাদিত পত্রিকা: সর্বশুভকরী (১৮৫০)

বিদ্যাসাগরের উল্লেখযোগ্য রচনা নিম্নরূপ-

পাঠ্যবই

  • বোধোদয়
  • বর্ণপরিচয় ১ম ও ২য় ভাগ
  • কথামালা
  • আখ্যান মুঞ্জুরি

গদ্যগ্রন্থ

বেতালপঞ্চবিংশতিপ্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ। এটি হিন্দি ভাষায় রচিত ‘বৈতাল পচ্চীসী’ থেকে অনুদিত। বিদ্যাসাগর এতে যতি/বিরাম চিহ্নের সফল প্রয়োগ করেছেন।
শকুন্তলাসংস্কৃত ভাষার নাটক ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’ এর অনুবাদ। উল্লেখযোগ্য চরিত্র: রাজা দুষ্মন্ত, মহর্ষি বিশ্বামিত্র, শকুন্তলা, ভরত (দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার পুত্র)।
ভ্রান্তিবিলাসশেক্সপিয়ারের Comedy of Error নাটক অবলম্বনে রচিত।
সীতার বনবাস

ব্যকারণ গ্রন্থ

  • সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা
  • ব্যাকরণ কৌমুদী

মৌলিক রচনা

ঈশ্বরচন্দ্র মূলত বাংলা পাঠ্যবইয়ের অভাব দূর করার জন্য ব্রত হন। তাই তার মৌলিক গ্রন্থের সংখ্যা খুব কম। তার বেশির ভাগ রচনা অনুবাদধর্মী। তার মৌলিক রচনাগুলো হলো –

  • প্রভাবতী সম্ভাষণ: প্রথম মৌলিক রচনা। বন্ধুর বালিকা কন্যা প্রভাবতীর মৃত্যু শোকে রচিত।
  • আত্মচরিত: আত্মজীবনীমূলক রচনা। বাংলা গদ্যে প্রথম আত্মজীবনীমূলক রচনা।
  • অতি অল্প হইল
  • আবার অতি অল্প হইল
  • ব্রজবিলাস
  • বিধবা বিবাহ ও যশোরের হিন্দু ধর্মরক্ষিণী সভা
  • রত্ন পরীক্ষা

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে কেন বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়?
ঈশ্বরচন্দ্র গদ্য সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে শৃঙ্খলা, পরিমিতিবোধ, সুললিল শব্দবিন্যাস, পদবিভাগ ও যতি চিহ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা গদ্যের অবয়ব নির্মাণে অবিচ্ছিন্নতা সঞ্চার করেন। তিনি বাংলা গদ্যের সমস্ত জটিলতা দূরীভূত করে তাকে সাহিত্যগুণ সম্পন্ন ও সর্বভাব প্রকাশক্ষম করেছিলেন। এছাড়া বাংলা গদ্যে সুষম বাক্য গঠনরীতির নির্দশন তিনিই প্রথম দেখিয়েছেন। এসব কারণেই তাকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়।

2 thoughts on “ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর”

  1. ১৮৪১, কলকাতায় মৃতু বরন করেন। আর ১৮৪৬ সালে সংস্কৃত কলেজে যোগদান করেন। আবার প্রায় একশ বছর পর উনি কবর থেকে ১৯৩৯ সালে বিদ্যাসাগর উপাধি পান? গড ব্লেস ইউ!

    1. মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। রচনার ভুল সংশোধন করা হয়েছে।

Leave a Reply