ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

Estimated Reading Time: 12 Minutes

১৯৬৮-র শেষের দিকে প্রায় এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র অসন্তোষ বাড়তে থাকে, যা থেকে ধীরে ধীরে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। পরিশেষে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান মধ্য দিয়ে আইয়ুব খান সরকারের পতন ঘটে।

গণঅভ্যুত্থান – এর ঘটনাক্রম

৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯

“ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ” গঠন

ছাত্রদের কয়েকটি সংগঠন নিয়ে “ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ” গঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ডাকসু ভিপি তোফায়েল আহমেদ। এ পরিষদ আওয়ামী লীগের ১৯৬৬-র ছয় দফাসহ মোট ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে।

৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯

৮ জানুয়ারি, ১৯৬৯

‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন

অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এর ভিত্তি ছিল ৮ দফা কর্মসূচি।

৮ জানুয়ারি, ১৯৬৯

২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯

আসাদ হত্যা

পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আসাদ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহিদ। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার আইয়ুব গেটের নাম আসাদ গেট রাখা হয়।

২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯

২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯

মতিউর রহমান হত্যা

নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার স্মরণে গুলিস্তান পার্কের নাম রাখা হয় ‘শহীদ মতিউর শিশু পার্ক’।

২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯

১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

সার্জেন্ট জহুরুল হক হত্যা

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ১৭ নং আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে হত্যা করা হয়।

১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

ড. শামসুজ্জোহা হত্যা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহাকে হত্যা করা হয়। তিনি দেশের প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী।

১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

আগড়তলা ষয়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার

তীব্র আন্দোলনের মুখে মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবসহ বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়।

২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

গণসংবর্ধনা ও ‘বঙ্গবন্ধু’

রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল সংবর্ধনায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯

২৫ মার্চ, ১৯৬৯

আইয়ুব খানের পতন

তীব্র আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান ক্ষমতা থেকে সরে যান।

২৫ মার্চ, ১৯৬৯

গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

আবদুল মোনেম খান। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি আইয়ুব খানের ঘনিষ্ঠ সহায়তাকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার শাসনকালে বাঙালি জাতীয়তাবাদিদের প্রতি বিরূপ আচরণের জন্য তাকে দোষারোপ করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করায় যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মুক্তিবাহিনীর হাতে নিহত হন।

২৪ জানুয়ারি। ১৯৬৯ সালের এই দিনে গণ-অভ্যুত্থানের কারণে তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরাচারি আইয়ুব খান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে সব আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। এদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হন নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান।

মওলানা আব্দুলা হামিদ খান ভাসানী। তার ২৯ ডিসেম্বর ১৯৬৮ তারিখে পাবনার ডিসির বাড়ি ঘেড়াও করার মাধ্যমে ঘেড়াও কর্মসূচির উদ্ভব ঘটে।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ – ১১ দফা কর্মসূচি

গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ – ৮ দফা কর্মসূচি

১১ দফার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো ছিল-

  • হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন বাতিল।
  • পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন।
  • জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ।
  • আগরতলা মামলার অভিযুক্তদের মুক্তি।

৮ দফার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো ছিল-

  • সব রাজনৈতিক রাজবন্দিদের মুক্তি।
  • জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার।
  • পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র প্রবর্তন।

শহিদ আনোয়ারা বেগম (২৫ জানুয়ারি, ১৯৬৯)।

  • কবিতা “আসাদের শার্ট” – শামসুর রহমান
  • উপন্যাস “চিলেকোটার সেপাই” – আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
  • উপন্যাস “ক্রীতদাসের হাসি” – শওকত ওসমান
  • গ্রন্থ “সত্য মামলা আগরতলা” – কর্ণেল শওকত আলী (অবঃ)

Leave a Reply