১৯৬৮-র শেষের দিকে প্রায় এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র অসন্তোষ বাড়তে থাকে, যা থেকে ধীরে ধীরে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। পরিশেষে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান মধ্য দিয়ে আইয়ুব খান সরকারের পতন ঘটে।
গণঅভ্যুত্থান – এর ঘটনাক্রম
“ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ” গঠন
ছাত্রদের কয়েকটি সংগঠন নিয়ে “ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ” গঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ডাকসু ভিপি তোফায়েল আহমেদ। এ পরিষদ আওয়ামী লীগের ১৯৬৬-র ছয় দফাসহ মোট ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে।
‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন
অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এর ভিত্তি ছিল ৮ দফা কর্মসূচি।
আসাদ হত্যা
পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আসাদ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহিদ। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার আইয়ুব গেটের নাম আসাদ গেট রাখা হয়।
মতিউর রহমান হত্যা
নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার স্মরণে গুলিস্তান পার্কের নাম রাখা হয় ‘শহীদ মতিউর শিশু পার্ক’।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হত্যা
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ১৭ নং আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হককে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে হত্যা করা হয়।
ড. শামসুজ্জোহা হত্যা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহাকে হত্যা করা হয়। তিনি দেশের প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী।
আগড়তলা ষয়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার
তীব্র আন্দোলনের মুখে মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবসহ বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়।
গণসংবর্ধনা ও ‘বঙ্গবন্ধু’
রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল সংবর্ধনায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
আইয়ুব খানের পতন
তীব্র আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান ক্ষমতা থেকে সরে যান।