কারক ও বিভক্তি

Estimated Reading Time: 58 Minutes

কারক বা কৃ (ক্রিয়া) + ণক (সম্পর্ক) একটি তৎসম শব্দ যার অর্থ “যা ক্রিয়া সম্পাদন করে”। বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সাথে নামপদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে। যেমন: সকলকে মরতে হবে। কারক ৬ প্রকার। যথা:

  • কর্তাকারক/কর্তৃকারক
  • কর্মকারক
  • করণকারক
  • অপাদান কারক
  • অধিকরণ কারক
  • সম্মন্ধ কারক

মূলত ক্রিয়ার সাথে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্কই কারক। সম্পর্কটি বোঝাতে এই বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়।

বিভক্তি

শব্দকে বাক্যে ব্যবহার উপযোগী পদে রূপান্তরিত করার জন্য শব্দের সাথে যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত করা হয় তাই বিভক্তি। মূলত বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের সম্পর্ক বা অন্বয় সাধনের জন্য বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন: ছাদে বসে মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন – বাক্যটিতে ‘ছাদে’ (ছাদে = ছাদ + এ) পদটি গঠনে ‘ছাদ’ শব্দের সঙ্গে ‘এ’ বিভক্তি যুক্ত করা হয়েছে। ফলে ‘ছাদ’ ও ‘বস’ শব্দের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। অনুরূপভাবে, মা=মা+০ বিভক্তি, শিশুকে=শিশু+কে বিভক্তি এবং চাঁদ=চাঁদ+০ বিভক্তি।

সুতরাং কারক হল নামপদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ক এবং এই সম্পর্ককে বিভক্তি চিহ্নের মাধ্যমে নির্দেশ করানো হয়। বাংলায় বিভক্তি সাত প্রকার। যথা:

  • প্রথমা বিভক্তি: অ, ০
  • দ্বিতীয়া বিভক্তি: কে, রে
  • তৃতীয়া বিভক্তি: দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক
  • চতুথী বিভক্তি: দ্বিতীয়া বিভক্তির মত (তবে নিমিত্ত বা জন্য বুঝাবে)
  • পঞ্চমী বিভক্তি: হতে, থেকে, চেয়ে
  • ষষ্ঠী বিভক্তি: র, এর
  • সপ্তমী বিভক্তি: এ, য় ,তে

কর্তাকারক বা কর্তৃকারক

বাক্যের কর্তা বা উদ্দেশ্যই কর্তাকারক (বা কর্তৃকারক)। বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ ক্রিয়া সম্পাদন করে সেটিই কর্তা তথা কর্তাকারক বা কর্তৃকারক। ‘কে’ বা ‘কারা’ দিয়ে বাক্যের ক্রিয়াপদকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, সেটিই বাক্যের কর্তা বা কর্তৃকারক। যেমন:

  • আমি ভাত খাই
    কে ভাত খায়? উত্তর হচ্ছে আমি। তাহলে আমি হচ্ছে কর্তৃকারক।
  • বালকেরা মাঠে ফুটবল খেলছে
    কারা ফুটবল খেলছে? উত্তর হচ্ছে-বালকেরা। তাহলে ‘বালকেরা’ হচ্ছে কর্তৃকারক।
  • অনেকগুলো বন্য হাতি বাগান নষ্ট করে দিল।
  • পাগলে কিনা বলে।

কর্তাকারকের আরও গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ

  • অর্থ অনর্থ ঘটায়। (কর্তায় শূন্য)
  • গুণহীন চিরদিন থাকে পরাধীন। (কর্তায় শূন্য)
  • দশে মিলে করি কাজ। (কর্তায় ৭মী)
  • পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল। (কর্তায় শূন্য)
  • রতনে রতন চিনে। (কর্তায় ৭মী)
  • আমার খাওয়া হলো না। (কর্তায় ৬ষ্ঠী)
  • রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি। (কর্তায় শূন্য)

কর্তাকারক ক্রিয়া সম্পাদনের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চার প্রকার। যথা:

মুখ্যকর্তা: বাক্যস্থিত যে কর্তা নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে মুখ্যকর্তা বলে। যেমন:

  • ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
    এখানে ক্রিয়াপদ ‘খেলা’ যা সম্পাদন করছে ‘ছেলেরা’
  • মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে

প্রযোজক কর্তা: যে (মূল) কর্তা নিজে ক্রিয়া সম্পন্ন করে না, কিন্তু অন্যকে নিয়োজিত করে ক্রিয়া সম্পন্ন করিয়ে নেয়, তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন: শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন; এখানে ক্রিয়াপদ ‘পড়াচ্ছেন বা পড়া’। মূল কর্তা ‘শিক্ষক’ নিজে এখানে পড়ছেন না; বরং তিনি ছাত্রদের নিয়োজিত করেছেন পড়ার কাজে। তাই ‘শিক্ষক’ এখানে প্রযোজক ক্রিয়া।

প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তা নিজে ক্রিয়া সম্পন্ন না করে যাকে নিয়োজিত করে ক্রিয়া সম্পন্ন করিয়ে নেন তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন: শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন। এখানে ‘ছাত্র’ হচ্ছে প্রযোজ্য কর্তা। অনুরূপভাবে,

  • মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। এখানে ‘মা’ প্রযোজক এবং ‘শিশু’ প্রযোজ্য কর্তা।
  • রাখাল (প্রযােজক) গরুকে (প্রযােজ্য কর্তা) ঘাস খাওয়ায়।

ব্যতিহার কর্তা: কোন বাক্যে দুটি কর্তা একত্রে বসে একজাতীয় ক্রিয়া সম্পন্ন করলে তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন: বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়, রাজায় রাজায় যুদ্ধ ইত্যাদি। এক্ষেত্রে দুটি কর্তা একে অপরের বিপরীত অভিমুখে কাজ করবে বা তারা একে অপরকে সহযোগীতা করবে না।

বাক্যের প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকম হতে পারে। যেমন-

কর্মবাচ্যের কর্তা (কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে): পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
ভাববাচ্যের কর্তা (ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে): আমার যাওয়া হবে না।
কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা (বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয়): বাঁশি বাজে।

এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার কর্তা –

উক্ত কর্তা: কর্তৃবাচ্যের কর্তাকে উক্ত কর্তা বলে। এখানে কর্তা ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন: ছেলেরা ফুটবল খেলছে।

অনুক্ত কর্তা: কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যের কর্তাকে অনুক্ত কর্তা বলে। এই দুই বাচ্যে প্রকৃত কর্তাটি আপাতদৃষ্টিতে কর্তা বলে মনে হয় না; এজন্যই এদের অনুক্ত বলা হয়। যেমন: তোমাকে যেতেই হবে; আমার খাওয়া হয়়েছে।

উল্লেখ্য অনুক্ত কর্তা ও ঊহ্য কর্তা এক নয়। ঊহ্য কর্তাকে বাক্যের মধ্যে দেখা যায় না। যেমন: “বাড়ি ফিরে পড়তে বসবো।”- এই বাক্যের কর্তা ‘আমি’ ঊহ্য আছে। অপরদিকে অনুক্ত কর্তা বাক্যে উপস্থিত থাকবে, কিন্তু বাক্যের মধ্যে কর্তার প্রাধান্য থাকবে না।

সহযোগী কর্তা: একাধিক কর্তা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এক‌ই ক্রিয়া সম্পন্ন করলে তাদের বলে সহযোগী কর্তা। যেমন: ভাইয়ে-ভাইয়ে পরামর্শ করছে; মা-মেয়ে রান্না করছে। ব্যতিহার কর্তা ও সহোযোগী কর্তার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে কর্তাদ্বয়ের মধ্যে সহযোগীতা বা বিরোধীতা থাকা।

নিরপেক্ষ কর্তা: বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা আলাদা হলে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে। শর্তসাপেক্ষ বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাটি কার‌ও অপেক্ষা না করে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেমন: “অপু এলে তপু যাবে।” এই বাক্যে তপু অপুর আসার অপেক্ষা করলেও অপু কার‌ও অপেক্ষা করছে না। তাই অপু নিরপেক্ষ কর্তা। অনুরূপভাবে, তুমি এলে আমি যাবো; সূর্য উঠলে পদ্ম ফুটবে।

সমধাতুজ কর্তা: ক্রিয়া ও কর্তা এক‌ই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হলে সেই কর্তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে। যেমন: খেলোয়াড় খেলে; এখানে খেলোয়াড় কর্তাটি ‘খেল্’ ধাতু থেকে এসেছে, খেলে ক্রিয়াটিও ‘খেল্’ ধাতু থেকে এসেছে। অনুরূপভাবে- লেখক লেখেন; পড়ুয়া পড়ছে।

বাক্যাংশ কর্তা: একটি বাক্যাংশ যখন বাক্যের কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে বাক্যাংশ কর্তা বলে। যেমন: তোমার হঠাৎ চলে যাওয়া আমাকে দুঃখ দিয়েছে; ডিভেলিয়ার্সের দারুণ খেলা আজ দক্ষিণ আফ্রিকাকে জেতাল।

উপবাক্যীয় কর্তা: জটিল বাক্যের একটি উপবাক্য বা খণ্ডবাক্য যখন কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে উপবাক্যীয় কর্তা বলে। যেমন: যাদের খিদে পেয়েছে চলে এসো; মনুষ্যত্ব‌ই শেষ কথা ছিলো তাঁর জীবনের আদর্শ।

সাধন কর্তা: করণ যখন কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে সাধন কর্তা বলে। যেমন: ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে; এ ছুরি ফল কাটতে পারলেও মাংস কাটতে পারে না; লাল টিপটা তোমাকে আর‌ও সুন্দর করে তুলেছে; আশি সালের সাইকেলটা আজ‌ও আমাকে ব‌ইছে।

হেতু কর্তা: ক্রিয়া সম্পাদনের কারণটি যখন কর্তা রূপে কাজ করে, তখন তাকে হেতু কর্তা বলে।
উদাহরণ: ম্যালেরিয়াতে তার শরীরটা ভেঙে দিল; এখানে ম্যালেরিয়া প্রকৃতপক্ষে শরীর ভেঙে পড়ার হেতু বা কারণ, কিন্তু ম্যালেরিয়া বাক্যটির কর্তা রূপে কাজ করছে।

কর্মকারক

কর্তা যাকে আশ্রয় করে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাই কর্ম বা কর্মকারক। ক্রিয়ার বিষয় হলো কর্ম। বাক্যের ক্রিয়াকে ‘ কি’ বা ‘কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া সেটিই কর্ম বা কর্মকারক। যেমন:

  • আমি ভাত খাই।
    যদি প্রশ্ন করা হয় কি খাই? উত্তর হচ্ছে-ভাত।
  • হাবিব সোহলকে মেরেছে।
    যদি প্রশ্ন করা হয় হাবিব কাকে মেরেছে? উত্তর হচ্ছে-সোহেলকে।

কর্মকারক দুই প্রকার। যথা:

মুখ্য কর্ম: বস্তুবাচক কর্মকে মুখ্য কর্ম বলে।
গৌণ কর্ম: প্রাণিবাচক কর্মকে গৌণ কর্ম বলে।

যেমন: বাবা আমাকে একটি মোবাইল কিনি দিয়েছেন। এখানে ‘আমাকে’ (কাকে কিনে দিয়েছেন?) গৌণ কর্ম এবং ‘মোবাইল’ (কি কিনে দিয়েছেন?) মুখ্য কর্ম।

গুরুত্বপূর্ণ কর্মকারক –

  • আত্মার সম্পর্কই হলো আত্মীয়। (কর্মে শূন্য)
  • অল্পবিদ্যা ভয়ংকারী। (কর্মে শূন্য)
  • কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল। (কর্মে শূন্য)
  • কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। (কর্মে শূন্য)
  • চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ সেথা শির। (কর্মে শূন্য)
  • দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। (কর্মে শূন্য)
  • খাড়ড়ে ছাগ কাটে। (কর্মে ৭মী)
বিভিন্ন প্রকার কর্ম

উদ্দেশ্য কর্ম ও বিধেয় কর্ম: এক‌ই ক্রিয়ার একটি বিভক্তিযুক্ত প্রধান কর্ম ও তার পরিপূরক বিভক্তিহীন একটি কর্ম থাকলে বিভক্তিযুক্ত প্রধান কর্মটিকে উদ্দেশ্য কর্ম ও বিভক্তিহীন পরিপূরক কর্মটিকে বিধেয় কর্ম বলে। যেমন: দুটো টাকা কামিয়ে তুমি ধরাকে সরা মনে করছো; এখানে প্রধান কর্ম হল ‘ধরা’ এবং ‘সরা’ তার পরিপূরক। সুতরাং ‘ধরা’ উদ্দেশ্য কর্ম, ‘সরা’ বিধেয় কর্ম। গলা শুনে করিমকে আমি রহিম মনে করেছি; এখানে প্রকৃত কর্ম ‘করিম’, এটি উদ্দেশ্য কর্ম এবং তার পরিপূরক ‘রহিম’ বিধেয় কর্ম। সাধারণত উদ্দেশ্য কর্মে বিভক্তি থাকে ও বিধেয় কর্মে থাকে না।

উপবাক্যীয় কর্ম: জটিল বাক্যের অপ্রধান খণ্ডবাক্যটি যদি সমগ্র বাক্যের কর্ম রূপে ব্যবহৃত হয় তাহলে তাকে উপবাক্যীয় কর্ম বলে। যেমন: আমি জানতাম আজ বৃষ্টি হবে; এখানে ক্রিয়া পদ হলো ‘জানতাম; যদি প্রশ্ন করা হয় কি জানতাম? তবে উত্তর হয় “আজ বৃষ্টি হবে”। সুতরাং “আজ বৃষ্টি হবে” হল উক্ত বাক্যের কর্ম।

বাক্যাংশ কর্ম: বাক্যাংশ বলতে সমাপিকা ক্রিয়াহীন পদগুচ্ছকে বোঝায় যা একটি পদের কাজ করে। এমন একটি বাক্যাংশ যখন বাক্যের কর্মরূপে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বাক্যাংশ কর্ম বলে। যেমন: আমি লোকটিকে ছুটে পালাতে দেখেছি; কী দেখেছি? উত্তর: লোকটিকে ছুটে পালাতে। এই কর্মের মধ্যে সমাপিকা ক্রিয়া নেই এবং এটি একক পদের কাজ করছে। তাই এটি বাক্যাংশ কর্ম।

সমধাতুজ কর্ম: বাক্যের ক্রিয়াপদ ও কর্ম যদি এক‌ই ধাতু থেকে নিষ্পণ্ণ হয়, তাহলে ঐ কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন: দারুণ খেলা খেলল ছেলেটা; এখানে ‘খেলা’ কর্ম ও ‘খেলল’ ক্রিয়া এক‌ই ধাতু (‘খেল্’ ধাতু) থেকে নিষ্পণ্ণ। অনুরূপভাবে- লম্বা ঘুম ঘুমালাম; খুব হাঁটা হেঁটেছি‌; কী হাসিটাই হাসলাম।
উল্লেখ্য ক্রিয়া যে ধাতু থেকে এসেছে, কর্মটি সেই ধাতু থেকেই আসতে হবে, সমার্থক ধাতু থেকে এলে সমধাতুজ হবে না। যেমন: “সে আজ দারুণ নৃত্য নাচল” এখানে √নাচ্ একটি বাংলা বা তদ্ভব ধাতু এবং নৃত্য কথাটি সংস্কৃত √নৃৎ ধাতু থেকে এসেছে। সুতরাং এটি সমধাতুজ কর্ম হবে না। সমধাতুজ কর্ম অকর্মক ক্রিয়াকে সকর্মক করে দিতে পারে।

অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী কর্ম: একটি ইতে-প্রত্যয়ান্ত অসমাপিকা ক্রিয়া যখন বাক্যে কর্মের ভূমিকা পালন করে তখন তাকে অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী কর্ম বলে। যেমন: আমি খেতে ভালোবাসি; তুমি পড়তে ভালোবাসো; তারা একবার দেখতে চায়।

কর্মের বীপ্সা: বাক্যের কর্মটি যখন পর পর দু’বার ব্যবহৃত হয় তখন তাকে কর্মের বীপ্সা বলে। যেমন: কথাটা জনে জনে বলেছি।

অক্ষুণ্ন কর্ম: কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্য করার সময় কর্মকে উদ্দেশ্য বা কর্তার স্থানে স্থাপন করা হয়, ফলে কর্মকে কর্তা মনে হয়। বাচ্য পরিবর্তনের পরেও যে কর্মটি অপরিবর্তিত বা অক্ষুণ্ন থাকে, তাকে অক্ষুণ্ন কর্ম বলে। যেমন:

কর্তৃবাচ্য: আমি রামকে উপহারটি দিলাম।
কর্মবাচ্য: রাম আমার দ্বারা উপহারটি প্রদত্ত হল।

এখানে দুটি কর্ম আছে; রাম ও উপহার। তার মধ্যে একটি কর্তার জায়গা দখল করছে এবং অন্যটি কর্ম হিসেবেই থাকছে। ‘রাম’ কর্মটি উদ্দেশ্যের স্থানে গেছে কিন্তু ‘উপহার’ অপরিবর্তিত আছে কর্ম রূপেই, তাই এক্ষেত্রে ‘উপহার’ অক্ষুণ্ন কর্ম। আবার বাচ্য পরিবর্তন করার সময় যদি এমন করি: “উপহারটি আমার দ্বারা রামকে প্রদত্ত হল।” তাহলে ‘রামকে’ অক্ষুণ্ন কর্ম। কারণ এই কর্মটি অপরিবর্তিত রয়েছে।

করণ কারক

‘করণ’ শব্দের অর্থ যন্ত্র, সহায়ক বা উপায়। করণকারক দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র বা উপকরণ বুঝায়। কর্তা যা দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাই করণকারক। ক্রিয়াকে ‘ কীসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় সেটিই করণ কারক। যেমন:

  • নীরা কলম দিয়ে লেখে।
    কীসের দ্বারা লেখে? উত্তর হচ্ছে-কলম। উল্লেখ্য কলম একটি উপকরণ। তাই কি দিয়ে লেখে? এমন প্রশ্ন করা যাবে না।
  • সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়।
    কী উপায়ে সিদ্ধি লাভ হয়? উত্তর হচ্ছে-সাধনায়।

গুরুত্বপূর্ণ করণকারক –

  • অর্থে অনর্থ ঘটে। (করণে ৭মী)
  • অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর। (করণে ৭মী)
  • কাঁথায় শীত মানে না। (করণে ৭মী)
  • খড়গে ছাগে কাটে। (করণে ৭মী)
  • ঘোড়াকে চাবুক মার। (করণে শূন্য)
  • জ্যোৎস্নাতে আলোকিত এই রাত্রি। (করণে ৭মী)
  • টাকায় কিনা হয়। (করণে ৭মী)
  • ত্রিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে। (করণে ৭মী)
  • তাকে হাতে না মারলেও ভাতে মারব। (করণে ৭মী)
  • ফুলে ফুলে সাজিয়েছে ঘর। (করণে ৭মী)
  • শাক দিয়ে মাছ ঢেকো না। (করণে ৩য়া)
  • অহংকারে পতন ঘটে। (করণে ৭মী)
  • টাকায় বাঘের দুধ মেলে। (করণে ৭মী)
  • নিজের চেষ্টায় বড় হও। (করণে ৭মী)
  • ফলে বৃক্ষের পরিচয়। (করণে ৭মী)
বিভিন্ন প্রকার করণ কারক

যন্ত্রাত্মক করণ: কর্তা যখন কোনো বস্তুকে ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তখন সেই বস্তুকে বলে যন্ত্রাত্মক করণ‌। যেমন: ছুরি দিয়ে ফল কাটছি; চামচ দিয়ে ভাত খাবো; কৃষক লাঙল দিয়ে মাটি চষে; আমরা চোখ দিয়ে দেখি।(দেহের অঙ্গ‌ও যন্ত্র)উল্লেখ্য বস্তু হলেই যন্ত্রাত্মক করণ হবে, এমন নয়। বরং বস্তুটিকে যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: টাকায় সব হয়; এখানে টাকা করণ হলেও যন্ত্রাত্মক করণ নয়। কেন না, টাকার বস্তুমূল্য কোনো কাজে লাগে না, কাজে লাগে তার বিনিময়-মূল্যটি। অবশ্য একশো টাকার একটা নোট দিয়ে কেউ যদি মাছি তাড়ানো হয় তাহলে টাকাও যন্ত্র হতে পারে।

উপায়াত্মক করণ: কর্তা যে উপায়ে ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে উপায়াত্মক করণ বলে। উপায় মূর্ত অথবা বিমূর্ত, দুইই হতে পারে। যেমন: বুদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে; কৌশলে আমাকে এড়িয়ে গেলো; টাকায় সব হয় না। কোন পথে সমস্যার সমাধান হবে? ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে।

হেতুবাচক/হেত্বর্থক/হেতুময়/কারণবাচক করণ: কর্তা যে কারণে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে হেতুবাচক করণ বলে। যেমন: ভয়ে পালিয়েছি; দুঃখে ভেঙে পড়লেন; লজ্জায় কেঁদে ফেলল; শরমে ক‌ইতে নারি।

সমধাতুজ করণ: ‘সমধাতুজ’ কথার অর্থ হল, এক‌ই ধাতু থেকে যার জন্ম। ক্রিয়াপদ ও করণ যদি এক‌ই ধাতু থেকে সৃষ্টি হয়, তবে সেই করণকে সমধাতুজ করণ বলে। যেমন: শক্ত বাঁধনে বেঁধেছি; লেখনী দিয়ে লিখি; ঝাড়ন দিয়ে ঘর ঝাড়লাম।

কালাত্মক করণ: কর্তা ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য যে পরিমাণ সময় ব্যয় করে সেই সময়কে কালাত্মক করণ বলে। যেমন: ব‌ইটা দুদিনে শেষ করেছি। একঘণ্টায় ফিরে আসবো।

কালাত্মক করণ ও কালাধিকরণের পার্থক্য: কালাত্মক করণ সময়ের পরিমাণ বোঝাবে এবং কালাধিকরণ সময়টাকে বোঝাবে। কত সময়ে কাজটি হলো বোঝালে সময়টি করণ হবে এবং কখন কাজটি হলো বোঝালে সময়টি অধিকরণ হবে।

লক্ষণাত্মক করণ: যে লক্ষণ দেখে চেনা যায়, তাকে লক্ষণাত্মক করণ বলে। যেমন: কলমে কায়স্থ চিনি, গোঁফেতে রাজপুত। শিকারি বেড়াল গোঁফে চেনা যায়। কাঁঠাল চোরের কাঁধে মালুম। রং দিয়ে মানুষ চেনা যায় না।

উপাদানবাচক করণ: যে উপাদান দিয়ে কোনো কিছু তৈরি হয় সেই উপাদানটিকে উপাদানবাচক করণ বলে। যেমন: আটা দিয়ে রুটি হয়‌। ইট দিয়ে বাড়ি তৈরি হয়।

সহকার অর্থে করণ: যার সহযোগে বা সহকারে ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে সহকার অর্থে করণ বলা হয়। উদাহরণ: মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছি। (মাংস-ভাত খেয়েছি বললে ‘মাংস-ভাত’ কর্ম হবে)। সজল চোখে সে বিদায় নিল। (সজল চোখের সহকারে)

অঙ্গবিকারমূলক করণ: কোনো অঙ্গে বিকৃতি বোঝালে সেই অঙ্গটির করণ কারক হয়‌। একেই অঙ্গবিকারমূলক করণ বলে। উদাহরণ: লোকটা পায়ে খোঁড়া। আমি কানে খাটো।

করণের বীপ্সা: করণ কারকপদটি পর পর দু’বার ব্যবহৃত হলে তাকে বলা হয় করণের বীপ্সা। যেমন: মেঘে মেঘে আকাশ ভরে উঠেছে। চারিদিক জলে জলে ভরে উঠেছে।

অপাদান কারক

যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয় তাকেই অপাদান কারক বলে। ক্রিয়াকে ‘কোথা হতে’, ‘কি হতে’, বা কিসের হতে প্রশ্ন করলে অপাদান কারক পাওয়া যায়। যেমন:

  • গাছ থেকে পাতা পড়ে।
    কোথা থেকে পাতা পড়ে? উত্তর -গাছ ।
  • পাপে বিরত হও।
    কি হতে বিরত হও? উত্তর – পাপ ।
বিভিন্ন প্রকার অপাদান কারক

স্থানবাচক অপাদান: যে স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর, পতন, নির্গমন, বিচ্যুতি, স্খলন, আরম্ভ ইত্যাদি বোঝায় সেই স্থানকে স্থানবাচক অপাদান বলে। যেমন: মাথা থেকে বোঝা নামলো। পকেট থেকে টাকা পড়েছে। ট্রেন হাওড়া ছাড়লো।

উৎসবাচক অপাদান: যে উৎস থেকে কোনো কিছু সৃষ্টি হয় বা সংগৃহীত হয়, তাকে উৎসবাচক অপাদান বলে। যেমন: তিলে তেল হয়। কালো মেঘে বৃষ্টি হয়। গোমুখ থেকে গঙ্গা উৎপন্ন হয়েছে। আমি বাঘে ডরাই না।(বাঘ ভয়ের উৎস)

অবস্থানবাচক অপাদান: কর্তা কোনো অবস্থানে থেকে দূরবর্তী কর্মের উপর ক্রিয়া সম্পাদন করলে সেই স্থানকে অবস্থানবাচক অপাদান বলে।যেমন: ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়াচ্ছি। সে কলকাতা থেকে ফোন করেছে। বাড়ি থেকেই ব্যবসা চালাই।

কালবাচক অপাদান: যে সময় ক্রিয়ার কাজটি শুরু হয় সেই সময়টি কালবাচক অপাদান। যেমন: সকাল থেকে পড়ছি। কাল থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।

রূপান্তর বা বিকৃতিমূলক অপাদান: এক জিনিস থেকে অন্য জিনিসে রূপান্তর বোঝালে প্রথম জিনিসটিকে অপাদান কারক ধরা হয়। যেমন: তোমাকে মানুষ থেকে অমানুষ করল কে? বাল্মীকি ডাকাত থেকে ঋষি হলেন।

দূরত্ববাচক অপাদান: এক স্থান থেকে অপর স্থানের দূরত্ব বোঝাতে এই অপাদান হয়। যেমন: বাঁকুড়া থেকে কলকাতা ২০০ কিমি। এখান থেকে কলকাতা কাছেই।

তুলনাবাচক অপাদান: দুইয়ের মধ্যে তুলনা বোঝাতে ‘চেয়ে’, ‘থেকে’ ‘অপেক্ষা’ প্রভৃতি অনুসর্গ-বিশিষ্ট পদটির অপাদান কারক হয়। একেই তুলনাবাচক অপাদান বলে। যেমন: তোমার চেয়ে আমি বড়ো। রাজুর চেয়ে ঋজু বেশি ফর্সা।

অধিকরণ কারক

ক্রিয়ার সম্পাদনের সময় বা স্থানকে অধিকরণ কারক বলে। ক্রিয়ার সাথে কোথায়/কখন/কিসে যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই অধিকরণ কারক। যেমন:

  • আমরা রোজ স্কুলে যাই।
    আমরা রোজ কোথায় যাই? উত্তর – স্কুলে।
  • প্রভাতে সূর্য ওঠে।
    কখন সূর্য ওঠে? উত্তর -প্রভাতে।

অধিকরণকে প্রাথমিক ভাবে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: আধার অধিকরণ ও ভাবাধিকরণ।

আধার অধিকরণ

আধার অধিকরণ তিন প্রকার: স্থানাধিকরণ, কালাধিকরণ ও বিষয়াধিকরণ।

স্থানাধিকরণ

যে স্থানে ক্রিয়ার কাজটি সম্পন্ন হয়, তাকে স্থানাধিকরণ বলে। যেমন: বাবা বাড়ি নেই। আমি স্কুলে পড়ি।

কালাধিকরণ

কালাধিকরণ‌ও দুই প্রকার: মুহূর্তাধিকরণ এবং ব্যাপ্তাধিকরণ

মুহূর্তাধিকরণ: ক্রিয়ার কাজটি এক মুহূর্তে সম্পাদিত হলে সেই সময়কে মুহূর্তাধিকরণ বলে। যেমন: লোকটি সকালে মারা গেছে।

ব্যাপ্তাধিকরণ: ক্রিয়ার কাজ দীর্ঘ সময় জুড়ে হয়ে থাকলে সেই সময়কে ব্যাপ্তাধিকরণ বলে। যেমন: আমি সকালে পড়েছি।(এই কাজটিও সকালে কিন্তু এক মুহূর্তে নয়)

বিষয়াধিকরণ

ক্রিয়ার কাজ যে বিষয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে বিষয়াধিকরণ বলে। যেমন: অঙ্কে তার মাথা আছে। পড়াশোনায় তার মন নেই। খেলাধূলায় তার দক্ষতা আছে। কাজে মন দাও।

ভাবাধিকরণ

ক্রিয়ার কাজটি কোনো বিমূর্ত ভাব বা কাজকে মধ্যে আধার করে সম্পাদিত হলে তাকে ভাবাধিকরণ বলে। যেমন: রাজা বিলাসিতায় মগ্ন। কথাটা গোলমালে হারিয়ে গেল।

সম্বন্ধ কারক

বিশেষ্য ও সর্বনামের সাথে বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্বন্ধ নির্দেশক কারককে সম্বন্ধকারক বলে। এ কারকে ক্রিয়ার সাথে সম্পর্ক পরক্ষ। যেমন:

  • ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না; এখানে ‘গন্ধ’ (বিশেষ্য) এবং ‘ঘুম’ (বিশেষ্য) এর মধ্যে সম্বন্ধ নির্দেশক কারক ‘ফুলের’।
  • তখনকার দিনে পায়ে হেটে চলতে হতো মাইলের পর মাইল।

আরও তথ্য –

  • অপ্রাণিবাচক বা ইতর প্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে ‘গুলো’, ‘গুলি’ যুক্তি হয়।
  • অপ্রাণিবাচক শব্দের পরে শূন্য বিভক্তি হয়। যেমন: কলম দাও।

এক নজরে কারক নির্ণয় –

ধাপ-১ বাক্যে ক্রিয়া চিহ্নিতকরণ

প্রথমের বাক্যের ক্রিয়াকে চিহ্নিতকরণ করতে হবে, কারণ ক্রিয়াপদের সাথে সম্পর্কই কারক।

ধাপ-২ ক্রিয়াকে প্রশ্ন করা

কে/কারা দিয়ে ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্তৃকারক পাওয়া যায়। যেমন: করিম গাড়ি চালায়। এখানে ক্রিয়াপদ ‘চালায়’; একে কে/কি দ্বারা প্রশ্ন করলে হয় ‘কে গাড়ি চালায়?’; এর উত্তর ‘করিম’। সুতরাং ‘করিম’ উক্ত বাক্যের কর্তা বা কর্তৃকারক।

কি/কাকে দিয়ে ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্মকারক পাওয়া যায়। যেমন: করিম গাড়ি চালায়। এখানে ক্রিয়া ‘চালায়’; সুতরাং ‘কি চালায়’ প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় ‘গাড়ি’। সুতরাং ‘গাড়ি’ বাক্যের কর্ম বা কর্মকারক।

কীসের দ্বারা/কী উপায়ে দিয়ে ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে উত্তরে করণকারক পাওয়া যায়। যেমন: অর্থে অনর্থ ঘটে। ক্রিয়াপদ ‘ঘটে’; কীসের দ্বারা অনর্থ ঘটে? প্রশ্ন করলে উত্তর হয় – ‘অর্থে’। সুতরাং ‘অর্থে’ উক্ত বাক্যের করণকারক।

কোথা হতে/কি হতে/কিসের হতে দিয়ে ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে উত্তরে অপাদানকারক পাওয়া যায়। যেমন: পাপে বিরত হও; কি হতে বিরত হও? উত্তর – পাপ ।

কোথায়/কিসে/কখন দিয়ে ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে উত্তরে অধিকরণকারক পাওয়া যায়। যেমন: প্রভাতে সূর্য ওঠে; কখন সূর্য ওঠে? উত্তর – প্রভাতে।

উদাহরণ: করিম প্রতি উৎসবে জমানো টাকা থেকে ইকরামকে চকলেট দেয়।

  • “কে” প্রতি উৎসবে জমানো টাকা থেকে নিজ হাতে ইকরামকে পান্জাবি/চকলেট দেয়? উত্তর- করিম (কর্তৃকারক)
  • করিম ইকরামকে কি দেয়? উত্তর-চকলেট (কর্মকারক)
  • কিসের দ্বারা ইকরামকে চকলেট দেয়? উত্তর- নিজ হাতে; (করণ কারক)
  • কোথায় হতে ইকরামকে চকলেট দেয়? উত্তর- জমানো টাকা থেকে (অপাদান কারক)
  • কখন চকলেট দেয়? উত্তর- প্রতি উৎসবে (অধিকরণ কারক)

30

কারক ও বিভক্তি

বিগত সালের প্রশ্ন

1 / 48

ব্যতিহার কর্তার উদাহরণ কোনটি?

2 / 48

নিচের বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

কপোল ভাসিয়া গেল নয়নের জলে।

3 / 48

'তাকে দিয়ে কিছু হবে না' নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

4 / 48

'জেলে ভাই ধরে মাছ মেঘের ছায়া' এখানে 'জেলে' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

5 / 48

'আমার যাওয়া হয় নি' - 'আমার' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

6 / 48

'আমাকে যেতে হবে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

7 / 48

'করিমকে রহিম গতকাল মেরেছে' বাক্যে কর্মকারক সূচক শব্দ কোনটি?

8 / 48

যাকে উদ্দ্যেশ্য করে ক্রিয়া সম্পাদিত হয় তাকে বলে-

9 / 48

কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তির উদাহরণ কোনটি?

10 / 48

'ভাইয়ে ভাইয়ে বেশ মিল' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

11 / 48

বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সাথে কোন পদের সম্পর্ককে কারক বলে?

12 / 48

'টাকায় টাকা আনে' এখানে 'টাকায়' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

13 / 48

'জিজ্ঞাসিব জনে জনে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

14 / 48

'ডাক্তার ডাক' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

15 / 48

'সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দিব কোথা' এই বাক্যে 'ঔষধ' কোন কারকে কোন বিভক্তির উদাহরণ?

16 / 48

বাক্যের প্রতিটি শব্দের সাথে অন্নয় সাধনের জন্য যে সকল বর্ণ যুক্ত হয় তাদের কী বলে?

17 / 48

'রাজায় রাজায় লড়াই করছে' এ বাক্যে 'রাজায় রাজায়' কী?

18 / 48

'কারক' (কৃ + ণক) শব্দটির অর্থ -

19 / 48

'অহঙ্কার পতনের মূল' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

20 / 48

'এমন ছেলে আর দেখিনি' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

21 / 48

'কালির দাগ দাও' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

22 / 48

'গৃহহীন চিরদিন থাকে পরাধীন' নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

23 / 48

ক্রিয়াপদের সাথে সম্পর্কযুক্ত পদকে কি বলে?

24 / 48

'প্রিয়জনে যাহা দিতে চাই তাই দিই দেবতারে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

25 / 48

'জল পড়ে, পাতা নড়ে' নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

26 / 48

কর্তা যা দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদন করেন তাকে বলে -

27 / 48

'বুলবুলিতে ধান খেয়েছে' এই বাক্যের 'বুলবুলিতে' শব্দে কোন কারক ও কোন বিভক্তি রয়েছে?

28 / 48

কোনটি করণ কারকে শূন্য বিভক্তির উদাহরণ?

29 / 48

'রহিম ধোপাকে কাপড় ধুতে দিল' ইহা কোন কারক?

30 / 48

'জগতে কীর্তিমান হও সাধনায়' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

31 / 48

'নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তা চলেছি একা' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

32 / 48

অল্প শোকে কাতর - বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

33 / 48

বাক্যের ক্রিয়ার সাথে অন্যান্য পদের যে সম্পর্ক তাকে কী বলে?

34 / 48

'শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুই' এখানে 'ভুঁই' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

35 / 48

'পরীক্ষা এলেই তার চোখে জল ঝড়ে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

36 / 48

'দশে মিলে করি কাজ' বাক্যে 'দশে' কোন কারকে কোন বিভক্তি?

37 / 48

'তিনি চোখে দেখেন না' এখানে 'চোখে' কোন কারক?

38 / 48

'দেবতার ধন কে যায় ফিরায়ে লয়ে' এ বাক্যে 'দেবতার' পদটি-

39 / 48

'যখন পড়বে না মোড় পায়ের চিহ্ন।' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

40 / 48

'গুণহীনে ত্যাগ কর' বাক্যে বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

41 / 48

কোনটি কর্তৃকারকে সপ্তমী বিভক্তির উদাহরণ?

42 / 48

'ব্যায়ামে শরীর ভাল থাকে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

43 / 48

'আমার গানের মালা আমি করব কারে দান?' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

44 / 48

ক্রিয়ার বিষয়কে কী বলে?

45 / 48

'আলোয় আধার কাটে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

46 / 48

'সকলকে মরতে হবে' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

47 / 48

'আমাদের একটি গল্প বলুন।' বাক্যে নিম্নরেখ শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?

48 / 48

'আমার গানের মালা আমি করব কারে দান।' বাক্যে 'কারে' শব্দটির কারক ও বিভক্তি কোনটি?

Your score is

The average score is 55%

0%

Leave a Reply