বাংলাদেশের কৃষি ধান প্রধান, নিবিড় স্বয়ংভোগী প্রকারের। এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল প্রায় ৮০% মানুষ। তবে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষির অবদান ক্রমহ্রাসমান, ১৩.৪৪% (২০১৯-২০)।
কৃষিসুমারি: কৃষক ও জমি
বাংলাদেশের প্রায় ৮০% জমিতে খাদ্যশস্য উৎপন্ন হয়। দেশে প্রথম ১৯৬০ সালে কৃষি সুমারি অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রথম পুর্নাঙ্গ কৃষি সুমারি অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে। এতে গ্রাম ও শহরে একযোগে সুমারি অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে।
জমি
- মোট জমির পরিমাণ ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ ৩৪ হাজার একর। এর মধ্যে আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি একর। উল্লেখ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আবাদী কৃষিজমির পরিমাণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। বাংলাদেশে মোট ভূমির প্রায় ৬০% কৃষিজমি।
- মাথাপিছু আবাদি জমির পরিমাণ – ০.৮ হেক্টর অথবা ০.২৮ একর
- কৃষকপ্রতি আবাদি জমির পরিমাণ- ০.১৫ একর।
প্রান্তিক জমি – যে জমি চাষ করে কেবল উৎপাদন খরচ তোলা যায়।
কৃষক
জমির পরিমাণের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের কৃষকদের নিম্নক্তোভাগে ভাগ করা যায়-
- বর্গাচাষি – যে সকল কৃষক অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে।
- ভূমিহীন কৃষক – নিজের জমির পরিমান ০ – ০.০৪৯ একর
- প্রান্তিক কৃষক – জমির পরিমাণ ০.০৫ থেকে ১.৪৯ একর
- ক্ষুদ্র কৃষক – নিজের জমির পরিমান ১.৫ – ২.৪৯ একর
- মাঝারী কৃষক – নিজের জমির পরিমান ২.৫০ – ৭.৪৯ একর
- বড় কৃষক – নিজের জমির পরিমান ৭.৫০ একর বা তার বেশি
মাটি
পৃথিবীর বিশাল প্রাকৃতিক শোধনাগার হচ্ছে মাটি। সাধারণত আদর্শ মাটিতে ৫% জৈব পদার্থ থাকে।
মাটির প্রকারভেদ
প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের মাটিকে ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –
- পাহাড়ি মাটি
- ল্যাটোসেলিক মাটি
- পলল মাটি
- জলাভূমি মাটি
- কোষ মাটি
বুনটের উপর ভিত্তি করে মাটি ৩ প্রকার। যথা:
- বেলে মাটি: ৭০% বা তার বেশি বালিকণা থাকে। মরুভূমি, চরাঞ্চল ও সমুদ্র উপকূলে বেলে মাটি দেখা যায়। বেলে মাটিতে জৈব পদার্থ নেই। তাই এ মাটি চাষের উপযোগী নয়।
- এঁটেল মাটি: ৪০-৫০% কর্দমকণা থাকে। পানি ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ। এ মাটিকে ভারি মাটিও বলা হয়।
- দোআঁশ মাটি: বালি, পলি ও কাদা/কর্দমকণা প্রায় সমপরিমাণে থাকে। এ মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি, তাই দোআঁশ মাটি চাষের জন্য সর্বাপেক্ষা উপযোগী। বাংলাদেশের অধিকাংশ মাটি দোআঁশ মাটি। কৃষিক্ষেত্রে দোআঁশ মাটিকে আদর্শ মাটি বলা হয়।
অম্ল মাটি: অম্ল বা এসিড মাটি অনুর্বর হয়। এজন্য কৃষি জমিতে মাটির অম্লতা কমানোর জন্য চুন ব্যবহার করা হয়।
ফসল উৎপাদনের মৌসুম
ফসল উৎপাদনের জন্য সারা বছরকে ২টি মৌসুমে ভাগ করা যায়। যথা –
- রবি মৌসুম
- খরিপ মৌসুম
রবি মৌসুম
- সময়কাল: আশ্বিন-কার্তিক থেকে ফাল্গুন (মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য মার্চ)।
- প্রধান ফসল: ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, লাউ, সিম, টমেটো, শীতকালীন অন্যান্য সবজি, বোরো ধান, গম, আলু ও সরিষা।
রবি শস্য শীতকালে রোপণ করে গ্রীষ্মকালে উত্তোলন করা হয়। তবে রবিশস্যকে শীতকালীন শস্য ও ধানপ্রধান বানিজ্যিক শস্য নামে অভিহিত করা হয়। উল্লেখ্য কচু রবি ফসল নয়।
খরিপ মৌসুম
চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস খরিপ মৌসুম। মূলত গ্রীষ্মকালীন ফসলগুলো এ মৌসুমে হয়। খরিপকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
খরিপ-১
- সময়কাল: চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ (মধ্য মার্চ থেকে মধ্য জুলাই)।
- প্রধান ফসল: আউশ ধান, পাট, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, করলা, পটল, কাঁকরোল, বরবটি ইত্যাদি এ মৌসুমের প্রধান ফসল। এছাড়া আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে এ মৌসুমের প্রধান ফল।
এই সময়কালকে গ্রীষ্মকালও বলা হয়।
খরিপ-২
- সময়কাল: আষাঢ় থেকে ভাদ্র (মধ্য জুন থেকে মধ্য সেপ্টেম্বর)।
- প্রধান ফসল: আমন ধান ও বর্ষাকালীন সবজি এ মৌসুমের প্রধান ফসল। এ মৌসুমে বাতাবীলেবু, তাল, আমলকি, জলপাই ইত্যাদি ফল পাওয়া যায়।
এই সময়কে বর্ষাকালও বলা হয়।
বারো মাসি সবজি: যেসব সবজি বারো মাসেই পাওয়া যায়। যেমন: লালশাক, বেগুন, ঢেঁড়স প্রভৃতি।
খাদ্যশস্য
বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্যগুলো হলো – ধান, গম, ডাল, ভুট্টা, আলু ইত্যাদি।
ধান
বাংলাদেশে উৎপন্ন ধানকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: আউস, আমন ও বোরো। এর মধ্যে প্রধান ধান হচ্ছে বোরো।
আউস ধান: উচু জমিতে চাষ করা হয়। এটি বৃষ্টি নির্ভর জাত। মূলত আষাঢ় মাসে জন্মে। এ ধান বোনা হয় চৈত্র-বৈশাখ মাসে এবং কাঁটা হয় আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে।
আমন ধান: তুলনামূলক নিচু জমিতে চাষ করা হয়। আমন ধান দুই প্রকার: রোপা আমন ও বোনা আমন। রোপা আমন প্রথমে বীজতলায় চারা প্রস্তুত করে পরে মূল জমিতে বোনা হয়। অপরদিকে বোনা আমন সরাসরি জমিতে বীজ ছিটেয়ে চাষ করা হয়। আমন ধান বোনা হয় শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এবং কাটা হয় জৈষ্ঠ্য মাসে।
বোরো ধান: নিচু জলাসয়, বিল, হাওড় ইত্যাদি জায়গায় চাষ করা হয়। এটি সেচ নির্ভর ধানের জাত। বোরো ধান বোনা হয় কার্তিক মাসে এবং কাটা হয় জৈষ্ট্য মাসে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় বোরো ধান। সিলেট অঞ্চলে এ ধান ভাল জন্মে।
ধানের জাত
ইরি-৮ নামের এক উফসি ধান সর্বপ্রথম এদেশে চালু করা হয় যা এখনো বর্তমান আছে। শীতকালীন ফসল হিসেবে ইরি ধান নিচু জলাসয়ে চাষ করা হয়। বিভিন্ন জাতের ধান –
- বন্যাপ্রবণ এলাকার উপযোগী ধান ব্রি-২৮, ব্রি-৪৬।
- মঙ্গা এলাকার উপযোগী ধান বি আর-৩৩।
- লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান বিনা-৮, বিনা-৯ ও ব্রি-৪৭।
- খরা সহিষ্ণু ধান নারিকা-১।
- ‘হরিধান’ দেশজ জাতের একটি ধান। এর উদ্ভাবক ঝিনাইদহের হরিপদ কাপালী।
- অঘনিবোরা ধান পানিতে ভিজালেই ভাত পাওয়া যায়।
উন্নতজাতের ধান – আলোক, ইরাটম, চান্দিনাম, নারিকা-১, প্রগতি, ব্রিশাইল (BR-4), ব্রি-৪৪, ব্রি-৪৫, বিপ্লব, ভরসা, ময়না, মালা ইরি, মোহিনী, মুক্তা, সুফলা, সোনার বাংলা-১, সুপার রাইস, হাইব্রিড হীরা, হরিধান ইত্যাদি।
গম
দেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। এটি শীতকালীন ফসল। উর্বর দোআঁশ মাটি গম চাষের জন্য উপযুক্ত। গমের উন্নত জাত- আকবর, আনন্দ, কাঞ্চন, দোয়েল, বলাকা, বরকত, সোনালিকা ইত্যাদি।
এছাড়া অন্যান্য খাদ্যশস্যগুলো হল – ডাল, তেলবীজ, আলু ইত্যাদি।
অর্থকারী ফসল
যে সকল ফসল সরাসরি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চাষ করা হয়, তাদেরকে অর্থকরী ফসল বলে। অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট, চা, আখ, তামাক, রেশম, রাবার ও তুলা প্রধান। উল্লেখ্য ধান অর্থকরী ফসল নয়।
পাট
বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট। পৃথিবীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ পাট বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় পাটকে সোনালী আঁশও বলা হয়। একটি কাঁচা পাটের গাইটের ওজন ৩.৫ মন। পাট পচানোর পদ্ধতিকে বলে রিবন রেটিং।
ময়মনসিংহ-ঢাকা-কুমিল্লা অঞ্চল বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ পাটবলয়। ফরিদপুরে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপন্ন হয়।
পাটকে ৩টি শ্রেনিতে ভাগ করা যায়। যথা – সাদা, তোষা ও মেছতা। তোষা পাট থেকে উন্নতমানের আঁশ পাওয়া যায়।
পাটের জীবন রহস্য: পাটের জীবন/জীনরহস্য/ডিএনএ উন্মোচনকারী দলের নেতা বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষক ড. মাকসুদুল আলম। তিনি ১৯৫৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১০ সালের ১৬ জুন তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা পাটের জিনোম/জন্ম রহস্য আবিস্কার করেন। এছাড়াও ড. মাকসুদুল আলম ভুট্টা, তুলা, সয়াবনসহ ৫০০টি উদ্ভিদের ক্ষতিকারক ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন।
জুটন ও জুট পলিমার: পাট ও তুলার সংমিশ্রনে এক ধরণের কাপড়। এতে ৭০ ভাগ পাট ও ৩০ ভাগ তুলা থাকে। ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুল্লাহ পাট থেকে জুটন আবিস্কার করেন। পাট থেকে জুট পলিমার/পলিব্যাগ তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করের ড. মোবারক আহমদ খান। এ ধরণের পলিব্যাগের নাম ‘সোনালী ব্যাগ’।
চা
চা বাংলাদশের দ্বিতীয় প্রধান অর্থকরী ফসল। চায়ের আদিনিবাস চীন। পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বিশিষ্ট উঁচু ও ঢালু জমি (যেমন পাহাড়), ২৫০ সেমি বৃষ্টিপাত, ১৫-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং উর্বর, লৌহ ও জৈব মিশ্রিত দোআঁশ পলিমাটি চা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।
সর্বাধিক চা বাগান আছে মৌলভীবাজার জেলায় ।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম চা বাগান হয় ১৮৪০ সালে চট্টগ্রাম ক্লাব এলাকায় এবং প্রথম বাণিজ্যিক চা উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫৭ সালে, সিলেটে।
তুলা
যশোর অঞ্চল তুলা চাষের জন্য উপযোগী।
রাবার
অধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চল যেমন চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটে রাবার উৎপন্ন হয়। ১৯৬১ সালে কক্সবাজারের রামুতে দেশের প্রথম রাবার বাগান করা হয়। রামু উপজেলা কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত।
তামাক
রপ্তানি আয়ের দিক দিয়ে অন্যতম শীর্ষ অর্থকরী ফসল। প্রধান চাষ অঞ্চল রংপুর।
রেশম
রেশম পোকার বৈজ্ঞানিক নাম Bombyx mori. রেশম পোকা বা মথ তুঁত গাছের পাতা খেয়ে বেঁচে থাকে। রেশম গবেষণা ইন্সটিটিউট রাজশাহীতে অবস্থিত। রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া অঞ্চলে রেশম চাষ হয়।
আনারস
সিলেটে পাহাড়িয়া অঞ্চলে আনারস চাষের ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
উন্নত ফসলের জাত
ফসল | জাত |
---|---|
ধান | আলোক, ইরাটম, চান্দিনাম, নারিকা-১, প্রগতি, ব্রিশাইল, ব্রি-৪৪, ব্রি-৪৫, বিপ্লব, ভরসা, ময়না, মালা ইরি, মোহিনী, মুক্তা, সুফলা, সোনার বাংলা-১, সুপার রাইস, হাইব্রিড হীরা, হরিধান |
গম | আকবর, আনন্দ, কাঞ্চন, দোয়েল, বলাকা, বরকত, সোনালিকা |
ভুট্টা | উত্তরন (ব্রাক উদ্ভাবিত), বর্ণালী, শুভ্র |
সরিষা | অগ্রণী, সফল |
তুলা | রূপালি ও ডেলফোজ |
তামাক | সুমাত্রা, ম্যানিলা |
মরিচ | যমুনা |
আলু | কার্ডিনেল, কুফরি, ডায়মন্ড, সিন্দুরী |
টমেটো | ঝুমকা, বাহার, মানিক, মিন্টু, রতন, শ্রাবণী, সিঁদুর |
বাধাকপি | কে ওয়াই ক্রস, গোল্ডেন ক্রস, গ্রীন এক্সপ্রেস, ড্রামহেড |
উল্লেখ্য পাখি ছাড়াও ‘ময়না’ ধানের জাতের নাম , ‘দোয়েল’ ও ‘বলাকা’ গমের জাতের নাম। নদী ছাড়াও ‘যমুনা’ মরিচের জাতের নাম। মিন্টু বাংলাদেশে উদ্ভাবিত প্রথম হাইব্রিড টমেটো।
সার
সার প্রধানত ২ প্রকার। জৈব সার ও অজৈব সার। জৈব সার মূলত জীবদেহ থেকে সংগৃহত হয়। যেমন: গোবর সার, সবুজ সার, খৈল সার, স্বর্ণা সার প্রভৃতি। অপরদিকে অজৈব সার প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়। উদাহরণ: ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএসপি, পটাশ সালফেট ইত্যাদি।
সারের মাধ্যমে মাটিতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করা হয়। এসব উপাদানগুলো উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং ভাল ফলনে সহায়তা করে। সারের মাধ্যমে মূলত ৪টি উপাদান মাটিতে সরবরাহ করা হয়: নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম।
নাইট্রোজেন সার
ইউরিয়া একটি বহুল ব্যবহৃত নাইট্রোজেন সার। ইউরিয়া সারে ৪৬% নাইট্রোজেন থাকে। ইউরিয়া সারের প্রধান কাজ হচ্ছে উদ্ভিদকে সবুজ ও সতেজ করা। আমাদের দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে মিথেন তথা প্রাকৃতিক গ্যাস। বেসিমার পদ্ধতিতে ইউরিয়া সার প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া ডিএপি, অ্যামনিয়া সালফেট ইত্যাদি সারে নাইট্রোজেন থাকে।
- উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তার করে।
- গাছ সবুজ ও সতেজ করতে সাহায্য করে।
ফসফরাস সার
- ফসলের মূল বৃদ্ধিতে ফসফরাস সার অপরিহার্য।
- কিছু ফসফরাস সার হল – টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট), এসএসপি, ক্যালসিয়াম সুপার ফসফেট ইত্যাদি।
পটাসিয়াম সার
পটাসিয়াম সার মূলত উদ্ভিদে ফুল, ফল ধারণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। মিউরেট অফ পটাস, পটাসিয়াম সালফেট প্রভৃতি পটাসিয়াম সারের উদাহরণ।
ক্যালসিয়াম সার
উদ্ভিদের কোষবৃদ্ধি ও বিভাজনে সহায়তা করে। জিপসাম ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সার।
উৎপাদন
- শুধু ইউরিয়া – পলাশ সার কারখানা (নরসিংদী), ঘোড়াশাল/ইউরিয়া সার কারখানা (নরসিংদী), নর্থওয়েস্ট ফার্টিলাইজার কোঃ (সিরাজগঞ্জ)
- ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়া – যমুনা সার কারখানা (জামালপুর), কর্ণফুলী সার কারখানা ও চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা।
- ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়াম সালফেট – শাহজালাল সার কারখানা (সিলেট)
- ইউরিয়া ও এএসপি – ন্যাচারাল গ্যাস সার কারখানা (সিলেট)
- ইউরিয়া, প্যাকিং এর লাইনিং ও পলিথিন – আশুগঞ্জ সার কারখানা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
- টিএসপি, এএসপি – টিএসপি কমপ্লেক্স (চট্টগ্রাম)
- ডিএপি – ডিএপি ফার্টিলাইজার কোঃ লিঃ (চট্টগ্রাম)
কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠানের নাম | সদর দপ্তর | তথ্য |
---|---|---|
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন | ঢাকা | BADC এর কাজ কৃষি উন্নয়ন। প্রধান বীজ উৎপাদনকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান। |
বাংলাদেশ পরমাণু/আনবিক কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট | ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে | বিনা-৮ ধানের উদ্ভাবক |
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট | গাজীপুরের জয়দেবপুর | |
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর | খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা | বাংলাদেশ সরকারের কৃষি বিষয়ক সংস্থা |
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট | ম্যানিলা, ফিলিপাইন | |
বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট | জয়দেবপুর, গাজিপুর | |
বাংলাদেশের পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট | মানিক মিয়া এভিনিউ, ঢাকা | |
বাংলাদেশের মৃত্তিকা গবেষণা ইন্সটিটিউট | ফার্মগেট, ঢাকা | |
বাংলাদেশের ইক্ষু গবেষণা ইন্সটিটিউট | ঈশ্বরদী, পাবনা | |
বাংলাদেশ ডাল গবেষণা কেন্দ্র | ঈশ্বরদী, পাবনা | |
বাংলাদেশের রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষন ইন্সটিটিউট | রাজশাহী | |
বাংলাদেশ আম গবেষণা কেন্দ্র | চাঁপাইনবাবগঞ্জ | |
বাংলাদেশ গম গবেষণা কেন্দ্র | নাসিপুর, দিনাজপুর | |
বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র | শিবগঞ্জ, বগুড়া | |
বাংলাদেশের চা গবেষণা কেন্দ্র/ইন্সটিটিউট | শ্রীমঙ্গল, সিলেট | |
বাংলাদেশ রাবার বোর্ড | চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম |
আরও তথ্য
- বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার – বরিশাল জেলা।
- বাংলাদেশের রুটির ঝুড়ি – দিনাজপুর।