সমুদ্রবন্দরের জন্য ০৮টি সংকেত এবং নদী বন্দরের জন্য ০৬টি (১ ও ২ বাদে) সংকেত ব্যবহৃত হয়।
১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: এ সময় বাতাসের গতিবেগ হবে ঘন্টায় ৫১ – ৬১ কিলোমিটার। এটি দূরবর্তী সমুদ্রের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ সংকেতের অর্থ হচ্ছে দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিমি এবং যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর ফলে বন্দর থেকে জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পরে জাহাজটির দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সম্মুখীন হতে পারে। এ সতর্ক সংকেত নদী বন্দরের জন্য প্রযোজ্য নয়।
২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত: এ সময় বাতাসের গতিবেগ হবে ঘন্টায় ৬২ – ৮৮ কিলোমিটার। এটিও দূরবর্তী সমুদ্রের জন্য প্রযোজ্য হবে। এর অর্থ হল দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ – ৮৮ কিমি। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে পড়তে পারে।
৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত: এটি সমুদ্র বন্দর উপকূলীয় অঞ্চল ও নদী বন্দরের জন্য প্রযোজ্য হবে। এর ফলে বন্দর ও বন্দরে আশেপাশের এলাকায় ঘণ্টায় 40-50 কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঝড় হওয়ার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং নদীতে চলাচলকারি 65 ফুট এবং এর কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট অর্জনগুলোকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয় যেতে হবে।
৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত: এটি সমুদ্র বন্দর ও উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য হবে। এর ফলে বন্দর ও আশেপাশের এলাকায় ঘূর্ণিঝড় কবলিত বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার হবে। ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো বিপদজনক সময় এখনো আসেনি। ১৫০ ফুট এবং এর কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট যে সকল নৌযান ঘন্টায় ৬১ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত ঝড়ো হাওয়া প্রতিরোধে সক্ষম, সেসকল নৌযানকে অনতিবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় যেতে হবে।
৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানোর পর খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব এর সভাপতিত্বে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সারাদেশে করণীয় সম্পর্কে এ সভায় দিক-নির্দেশনা দেবে। এ সংকেত দেখানোর পর থেকেই সংশ্লিষ্ট জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় মিলিত হবে এবং তাদের এলাকার বিষয়ে হুঁশিয়ারি সংকেত উল্লেখ থাকলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করবে। এসময় থেকে গণবার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমুদ্র বন্দরের জন্য স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত জার্মানি ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রিক ধরনের ঝড়ের পূর্বাভাস যা উপকূলীয় অঞ্চল সহ দেশের এক বিশাল অংশে আঘাত করতে পারে কিন্তু নদী বন্দরের জন্য স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত এর অর্থ মূলত নির্দিষ্ট এলাকায় অস্থায়ী ঝড় অকাল-বৈশাখীর সংক্রান্ত পূর্বাভাস সমুদ্র উপকূল উপকূলবর্তী এলাকায় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সহ দেশের যে কোন এলাকায় আঘাত হানতে পারে।
৬ নং বিপদ সংকেত: এ সময় মাঝারী তীব্রতা সম্পন্ন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় মাঝারি ঝোড়ো হওয়া বিরাজ করবে। এ সময় ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে এবং নদীতে চলাচলকারি সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
৮ নং মহাবিপদ সংকেত: এ সময় প্রচন্ড যোগ্যতাসম্পন্ন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দরে অতি তীব্র হওয়া বিরাজ করবে। প্রচণ্ড এ ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কিলোমিটার হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং নদীতে চলাচলকারি সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
৯ নং মহাবিপদ সংকেত: এটি প্রচন্ড তীব্রতা সম্পন্ন একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় যার কারণে বন্দর এলাকায় এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অতি তীব্র ঝড়ো হাওয়া বিরাজ করবে। হারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮-১৭০ কিলোমিটার হতে পারে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং নদীতে চলাচলকারি সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
১০ নং মহাবিপদ সংকেত: এ সময় অতি প্রচন্ড তীব্রতা বিশিষ্ট বা সুপার সাইক্লোন এর তীব্রতা বিশিষ্ট প্রচন্ডতম একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দর এলাকায় অতীব তীব্র ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করবে। সর্বোচ্চ তীব্রতা বিশিষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার বা আরো বেশি হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
সূত্র: দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা বিভাগ