চিলেকোঠার সেপাই (সংক্ষিপ্ত কাহিনী)

Estimated Reading Time: 7 Minutes

ওসমান, উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র, একজন ছোটখাট সরকারি চাকুরে। উপন্যাস শুরু হয় তার মাধ্যমে। ঘুম ভাঙতেই ওসমান সংবাদ পায় তার নিচের ভাড়াটিয়ার বড় ছেলে মিছিলে গিয়ে শহিদ হয়েছে। তার কানে বাজতে থাকে ছেলে হারানো বাবার আর্তনাদ।

হাড্ডি খিজিরের মাহাজন একজন পাকিস্তানপন্থি। খিজিরের মা ও বৌয়ের দিকে সে কুনজর দেয়। কিন্তু খিজির মহাজনের বিরুদ্ধে একা তেমন কিছুই করতে পারে না। খিজির নিয়মিত মিছিল মিটিংয়ে যায় বলে মহাজন তাকে দেখতে পারে না। একসময় মহাজনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার গ্যারেজের সকল রিক্সাচালক বিদ্রোহ করে বসে। মহাজনের এক দালালের সাথে হাতাহাতি হয় খিজিরের। পরে মহাজনের আশ্রয় ছেড়ে ওসমানের চিলেকোঠায় উঠে পড়ে খিজির।

অপরদিকে ওসমানের বন্ধু আনোয়ার নিজ গ্রামে গিয়ে খয়বর গাজীর অত্যাচার প্রত্যক্ষ করে। সাধারণ গ্রামবাসীর সম্পদ আত্মসাৎ করাই যেন খয়বর গাজীরর মূল কাজ। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘবদ্ধ করে রুখে দাঁড়ায় আনোয়ার। একসময় গ্রামবাসী খয়বর গাজীকে পাকরাও করে, কিন্তু স্বাস্তি হবার আগ মুহূর্তে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় সে।

অন্যদিকে ঢাকায় ওসমান প্রেমে পড়ে তার প্রতিবেশির মেয়ে রানুর। কিন্তু ক’দিন পরেই রানুর বিয়ের কথা ওঠে। তখন ভেঙ্গে যায় ওসমানের মন। কিন্তু তাতেও তার মিছিলে যাওয়া আটকায় না। বরং বাসা থেকে বেরুতে না পাড়লেই যেন দম বন্ধ লাগে ওসমানের। সব শুনে, দেখে, মিটিংয়ে যায়, আবার মিছিলেও শরিক হয়। কিন্তু তবুও যেন সব কিছুতে শরিক নয়। তাকে ঘিরে থাকে চিলে কোঠার চার দেয়াল।

আন্দোলনের শেষের দিকের এক মিছিলে মিলিটারির গুলিতে শহিদ হয় খিজির এবং মানসিক ভারসাম্য হারায় ওসমান। ওসমানের পাগলামীর খবর পেয়ে গ্রাম থেকে ছুটে আসে বন্ধু আনোয়ার। সে তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলেও তার নিজ পরিবার মানা করে দেয়। তাই চিলেকোঠাতেই থাকে হয় ওসমানকে।

দিনে দিনে ওসমানের পাগলামী বাড়তে থাকে। একসময় সে বদ্ধ উন্মাদে পরিণত হয়। হঠাৎ একদিন আনোয়ারের ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় বেড়িয়ে যায় ওসমান।

তথ্য
লেখক: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
উল্লেখযোগ্য চরিত্র: ওসমান, হাড্ডি খিজির, আনোয়ার, খয়বর গাজী
১৯৬৯ এ পূর্ববাংলার শোচনীয় রাজনৈতিক অবস্থা এবং শহর ও গ্রামে গণআন্দোলনের প্রক্ষাপটে উপন্যাসটি রচিত রচিত।

Leave a Reply