ধাতু

Estimated Reading Time: 12 Minutes

ধাতু কি?

ক্রিয়ার মূল অংশকে ধাতু বলে। একটি ক্রিয়াপদকে বিশ্লেষণ করলে দুটি অংশ পাওয়া যায়। যথা: ধাতু বা ক্রিয়ামূল ও ক্রিয়া বিভক্তি। যেমন: পড়ে একটি ক্রিয়াপদ। একে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় ‘√পড়্’ + এ = পড়ে। এখানে ‘পড়্’ হল ধাতু বা ক্রিয়ামূল এবং ‘এ’ হল ক্রিয়া বিভক্তি।

ধাতুর প্রকারভেদ

ধাতু সাধারণত ৩ প্রকার। যথা:

  • মৌলিক ধাতু
  • সাধিত ধাতু
  • যৌগিক ধাতু

মৌলিক ধাতু

যে ধাতুকে বিশ্লেষণ করা যায় না তাই মৌলিক ধাতু। যেমন: চল্, পড়্ ইত্যাদি। মৌলিক ধাতুকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

বাংলা ধাতু

যে ধাতুগুলো সংস্কৃত থেকে সোজাসুজি আসে নি। যেমন: আক্, কহ্, কর্, কাট্, কাদ্, কিন্, খা, গড়্, ঘষ্, দেখ্, ধর, পড়্, বাঁধ্, বুঝ্, রাখ্, শুন্, থাক্, হাস্, খেল্, জান্, নাচ্ ইত্যাদি।

সংস্কৃত ধাতু

বাংলায় ব্যবহৃত তৎসম ক্রিয়াপদের ধাতু। যেমন: অঙ্ক, কথ্, কৃৎ, কৃ, ক্রন্দ্, ক্রী, খাদ্, গঠ্, ঘৃষ্, দৃশ্, ধৃ, পঠ্, বন্ধ্, বুধ্, বিধ্, বৃধ্, রক্ষ্, শ্রু, স্থা, হস্, লিখ্, গম্ ইত্যাদি।

মনে রাখুন –

  • খা বাংলা ধাতু কিন্তু খাদ্ সংস্কৃত ধাতু
  • গড়্ বাংলা ধাতু কিন্তু গঠ্ সংস্কৃত ধাতু
  • ঘষ্ বাংলা ধাতু কিন্তু ঘৃষ্ সংস্কৃত ধাতু
  • দেখ্ বাংলা ধাতু কিন্তু দৃশ্ সংস্কৃত ধাতু
  • ধর বাংলা ধাতু কিন্তু ধৃ সংস্কৃত ধাতু
  • পড়্ বাংলা ধাতু কিন্তু পঠ্ সংস্কৃত ধাতু
  • শুন্ বাংলা ধাতু কিন্তু শ্রু সংস্কৃত ধাতু
  • থাক্ বাংলা ধাতু কিন্তু স্থা সংস্কৃত ধাতু
  • হাস্ বাংলা ধাতু কিন্তু হস্ সংস্কৃত ধাতু

এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধাতু –

বাংলাসংস্কৃত
আক্অঙ্ক
কর্কৃ
কহ্, কাট্, কাদ্, কিন্কথ্, কৃৎ
বাঁধ্, বুঝ্, বিধ্, বৃধ্বন্ধ্, বুধ্
রাখ্রক্ষ্
খেল্, জান্, নাচ্লিখ্, গম্

বিদেশাগত ধাতু

বাংলায় ব্যবহৃত বিদেশী পদের ধাতু। যেমন: আঁট্, চেঁচ, খাট্, জম্, ঝুল্, টান্, ডর্, ফর্, চাহ্, ভিজ্, ঠেল্ ইত্যাদি।

সাধিত ধাতু

সাধিত ধাতু হল মৌলিক ধাতু বা নাম শব্দের সাথে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে গঠিত ধাতু। যেমন: √পড়্ + আ = পড়া। এখান পড়্ মৌলিকধাতু, এর সাথে ‘আ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে সাধিত ধাতু ‘পড়া‘ গঠিত হয়েছে।

সাধিত ধাতুর সাথে কাল পুরুষসূচক বিভক্তি যুক্ত করে ক্রিয়াপদ গঠিত হয় | যেমন: মা শিশুকে চাঁদ দেখায় (দেখ্ + আ + বর্তমান কালের সাধারণ নামপুরুষের ক্রিয়া বিভক্তি ‘য়’ = দেখায়)| এরূপ- শোনায়, বসায় ইত্যাদি।

সাধিত ধাতু ৩ প্রকার। যথা: নাম ধাতু, প্রযোজক ধাতু ও কর্মবাচ্যের ধাতু।

নাম ধাতু

বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অনুকার অব্যয়ের পরে “আ’ প্রত্যয় যোগ করে যে ধাতু গঠিত হয় তাকে নাম ধাতু বলে। যেমন: √বেত্ + আ = বেতা। এখানে ‘বেত’ বিশেষ্য পদ যার সাথে ‘আ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নামধাতু ‘বেতা’ গঠিত হয়েছে। শিক্ষক ছাত্রকে বেতাচ্ছেন।

প্রযোজক ধাতু

মৌলিক ধাতুর পরে প্রেরণার্থ (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে ) ‘আ’ প্রত্যয় যোগ করে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু গঠিত হয়। যেমন: √পড়্ + আ = পড়া; তিনি ছেলেকে পড়াচ্ছেন (নিজে পড়ছেন না বরং ছেলেকে নিয়োজিত করেছেন পড়ার কাজে)।

কর্মবাচ্যের ধাতু

মৌলিক ধাতুর সঙ্গে আ প্রত্যয় যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু সাধিত হয়। এটি বাক্যমধ্যস্থ কর্মপদের অনুসারী ক্রিয়ার ধাতু। যেমন: দেখ + আ = দেখা; কাজটি ভালো দেখায় না।

যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু

বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে কর্‌, দে, পা, খা, ছাড় ইত্যাদি মৌলিক ধাতু সংযুক্ত হয়ে যে নতুন ধাতু গঠিত হয়, তা-ই সংযোগমূলক ধাতু। যেমন: যোগ (বিশেষ্য পদ) + কর্‌ (ধাতু) = যোগ কর। তিনের সাথে পাঁচ যোগ কর

44

ধাতু

বিগত সালের প্রশ্ন

1 / 16

গুণ ও বৃদ্ধি বলা হয়-

2 / 16

বিভক্তিহীন নাম শব্দকে বলে-

3 / 16

ধাতু বা শব্দের শেষে প্রত্যয় যুক্ত করার উদ্দেশ্য কী?

4 / 16

ক্রিয়ার যে অংশকে বিশ্লিষ্ট করা যায় না, তাকে বলে-

5 / 16

প্রকৃতি বলতে কি বোঝায়?

6 / 16

'পাঠক' শব্দটি কোন শ্রেণীর ধাতু দ্বারা গঠিত?

7 / 16

নিচের কোন শব্দটি প্রতিপাদিক?

8 / 16

যে ধাতু বিশ্লেষণ করা যায় না, তাকে বলা হয়-

9 / 16

ধাতু কয় প্রকার?

10 / 16

কোনটি বাংলা ধাতু?

11 / 16

কোনটি নাম ধাতুর উদাহরণ?

12 / 16

প্রত্যয় কত প্রকার?

13 / 16

মৌলিক ধাতুর অপর নাম কি?

14 / 16

কোনটি নাম ধাতু?

15 / 16

'যা কিছু হারায় গিন্নী বলেন, কেষ্টা বেটাই চোর' এখানে 'হারায়' কোন ধাতুর?

16 / 16

যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে বলে-

Your score is

The average score is 64%

0%

Rate this quiz

1 thought on “ধাতু”

Leave a Reply