বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলি

Estimated Reading Time: 34 Minutes

পতাকা

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত। সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রং উদীয়মান সূর্য ও স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০ : ৬ এবং দৈর্ঘ্য ও বৃত্তের ব্যাসার্ধের অনুপাত ৫ : ১। পতাকার দৈর্ঘ্যের দিক থেকে ২০ ভাগের ৯ ভাগের (বাঁ দিক থেকে) শেষ বিন্দুর ওপর অঙ্কিত লম্ব এবং প্রস্থের দিকে মাঝখান বরাবর অঙ্কিত সরল রেখার ছেদ বিন্দু হলো বৃত্তের কেন্দ্র।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাথে জাপানের জাতীয় পতাকার মিল রয়েছে, কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে সবুজের জায়গায় জাপানীরা সাদা ব্যবহার করে। এছাড়া বাংলাদেশের পতাকায় লাল বৃত্তটি একপাশে একটু চাপানো হয়েছে যেন পতাকা যখন উড়বে তখন বৃত্তটি পতাকার মাঝখানে দেখা যায়।

পতাকা দিবস ২রা মার্চ। ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রসভায় তৎকালীন ছাত্রনেতা ডাকসু ভিপি আ. স. ম. আবদুর রব প্রথম জাতীয় পতাকা (মানচিত্র খচিত) উত্তলন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পতাকায় লাল বৃত্তের মাঝে হলুদ মানচিত্র ছিল। মানচিত্র খচিত পতাকার ডিজাইনার শিব নারায়ণ দাশ। তবে মানচিত্র পতাকার উভয় দিকে ফুটিয়ে তোলা কঠিন। তাই স্বাধীনতার পর পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দেওয়া হয়।

১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার পূর্বে ব্যবহৃত পতাকা থেকে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার দ্বায়িত্ব দেয় পটূয়া কামরুল হাসানকে। ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে পতাকা থেকে মানচিত্রটি সরিয়ে ফেলা হয়। পতাকার উভয় পাশে সঠিকভাবে মানচিত্রটি ফুটিয়ে তোলার অসুবিধা, পতাকা থেকে মানচিত্র সরিয়ে ফেলার অন্যতম কারণ। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমান বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা যা ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারীভাবে গৃহীত হয়। 

একনজরে-

  • মানচিত্রযুক্ত পতাকার ডিজাইনার শিব নারায়ণ দাস
  • মানচিত্রহীন পতাকার ডিজাইনার পটূয়া কামরুল হাসান

জাতীয় প্রতীক

জাতীয় প্রতীক

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রে রয়েছে পানিতে ভাসমান একটি শাপলা ফুল। শাপলা ফুলটিকে বেষ্টন করে আছে ধানের দুটি শীষ। চূড়ায় পাটগাছের পরস্পরযুক্ত তিনটি পাতা এবং পাতার উভয় পার্শ্বে দুটি করে মোট চারটি তারকা। জাতীয় প্রতীকের ডিজাইনার পটুয়া কামরুল হাসান

চারটি তারকা চিহ্ন দ্বারা বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূলনীতিকে নির্দেশ করা হয়েছে। পানি, ধান ও পাট প্রতীক দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করা হয়েছে বাংলাদেশের নিসর্গ ও অর্থনীতি। এ তিনটি উপাদানের উপর স্থাপিত জলজ প্রস্ফুটিত শাপলা হলো অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক। তারকাগুলো দ্বারা ব্যক্ত হয়েছে জাতির লক্ষ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা। 

সরকারের সীলমোহর

বাংলাদেশ সরকারের সীলমোহর

বাংলাদেশ সরকারের সিলমোহর মন্ত্রিপরিষদ এবং সরকার দাফতরিক কাজে ব্যবহার করে। এ সিলমোহরের একটি সংস্করণ বাংলাদেশী পাসপোর্টগুলোর প্রচ্ছদ পৃষ্ঠায় ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকলীন সময়ে ব্যবহৃত পতাকার নকশার মত করে এই সিলটি তৈরী করা হয়েছে যা অনেকটা ঔ পতাকার বৃত্তাকার সংস্করণ। নকশার বাইরের সাদা অংশটির উপরে বাংলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং নিচে সরকার লেখা। দুইপাশে দুইটি করে মোট চারটি লাল ৫ কোণা বিশিষ্ট তারকা। কেন্দ্রে একটি লাল বৃত্তের মধ্যে হলুদ রংয়ের বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা। এটির নকশাকার হলেন এ. এন. এ. সাহা

জাতীয় সংসদ ভবন

সংসদ ভবন বা জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্স ঢাকার শেরেবাংলা নগরে ২১৫ একর জায়গার ওপর অবস্থিত। ৯ তলা বিশিষ্ট ভবনটির মূল স্থপতি লুই কান। তিনি একজন প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি। বাংলাদেশের সংসদ ভবন উপমহাদেশের অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন। এর স্থাপত্যশৈলী দ্বারা প্রকৃতির বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভবনটি স্থাপত্য উৎকর্ষের জন্য ১৯৮৯ সালে আগা গান পুরষ্কার পায়। মূল সংসদ ভবন জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সের একটি অংশ। কমপ্লেক্সের মধ্যে আরো আছে সুদৃশ্য বাগান, কৃত্রিম হ্রদ এবং সংসদ সদস্যদের আবাসস্থল। সংসদ সংলগ্ন লেকটি ক্রিসেন্ট লেক নামে পরিচিত।

পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাংলার আইনসভা হিসাবে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলটি ব্যবহৃত হত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম ও দ্বিতীয় সংসদের অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হয় পুরনো সংসদ ভবনে যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পকিস্তান আমলে পরিকল্পনা গ্রহণ ও নির্মানকাজ শুরু হলেও বর্তমান ভবনটির উদ্বোধন করা হয় ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেন। একই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনে বর্তমান ভবনটি প্রথম সংসদ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এক কক্ষ বিশিষ্ট এবং সংসদের প্রতীক শাপলা ফুল।

বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ

জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি সাভারের নবীনগরে আবস্থিত। এর স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। সাতটি ত্রিভুজাকৃতি দেয়াল নিয়ে গঠিত সৌধটির উচ্চতা ১৫০ ফুট বা ৪৬.৬ মিটার এবং সৌধ এলাকার ক্ষেত্রফল ১০৯ একর। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কগণ সরকারিভাবে বাংলাদেশ সফরে আসলে এই স্মৃতিসৌধে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন রাষ্ট্রাচারের অন্তর্ভুক্ত। স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিক্রমা বা পর্যায় হিসেবে সাতটি ঘটনাকে বিবেচনা করে সৌধটি নির্মিত হয়েছে। ঘটনাগুলো হল:

১৯৭২ এর ১৬ই ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৮২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হোসেন মুহাম্মাদ এরশাদ এর উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা…”। এর রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৩১২ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার আশ্বিন সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’ গ্রন্থের স্বরবিতান অংশভুক্ত। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রক্ষিতে গানটি রচিত হয়েছিল। গগণ হরকরার ‘আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে” বাউল গানটির সুরের অনুষঙ্গে গানটি রচিত। গানটিতে প্রধানত স্থান পেয়েছে বাংলার মনরম প্রকৃতির কথা। চলচিত্রকার জহির রায়হান ১৯৭০ সালে তার বিখ্যাত “জীবন থেকে নেওয়া” কাহিনী চিত্রে গানটির চিত্রায়ন করেন। পল্টন ময়দানে ঘোষিত স্বাধীনতার ইসতেহারে(১৯৭১ সালের ৩ মার্চ) এ গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ লাইন সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়। সংবিধানের ৪.১ অনুচ্ছেদে ‘আমার সোনার বাংলা’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে ঘোষিত হয়েছে। এটি মূলত ২৫ চরণ বিশিষ্ট একটি কবিতা। এ কবিতার প্রথম ১০ চরণ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। তবে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রথম ৪ চরণ বাজানো হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় কবি

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জৈষ্ঠ ১৩০৬) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহাকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া। তিনি ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯১৭ সালের শেষের দিকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। করাচি সেনানিবাসে তার সৈনিক জীবন কাটে। ১৯২০ সালে সৈনিক জীবন শেষ করে ফিরে আসেন। তিনি ‘নবযুগ’ পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯২২ সালে ‘ধুমকেতু’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ধূমকেতু সপ্তাহে দুইবার প্রকাশিত হত। এর প্রথম পাতার শীর্ষে লেখা থাকত এই্ পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বাণী-

‘কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয় ধুমকেতু আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।’

১৯২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ধুমকেতুতে কাজী নজরুলের রাজনৈতিক কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হয়। ২৩ জানুয়ারি তার ‘যুগবাণী’ প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত হয় এবং ঐ দিনই তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। বন্দী অবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘বসন্ত’ গীতিনাট্যটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এই আনন্দে জেলে বসে নজরুল ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ কবিতাটি রচনা করেন।

কাজী নজরুল ইসলামের উপাধি ও পদক

উপাধি/পদক/ডিগ্রিসালপ্রদান করেছে
জগত্তারিণী (উপাধি)১৯৪৫কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পদ্মভূষণ পদক১৯৬০ভারত সরকার
ডক্টরেট ডিগ্রি১৯৬৯রবীন্দ্রভারতী
ডক্টরেট ডিগ্রি১৯৭৪ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
একুশে পদক১৯৭৬বাংলাদেশ সরকার

কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম ঢাকা আসেন ১৯২৬ সালের জুন মাসের শেষ সপ্তাহে। ১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে ভারত থেকে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে আনা হয় এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৭৪ সালের এক সংবর্ধনায় তাকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে কবি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহী মসজিদ প্রঙ্গনে তার মাজার অবস্থিত। কল্লোল যুগের বিখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার ছদ্মনাম ‘ধূমকেতু’। তার ৫টি গ্রন্থ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

অন্যান্য জাতীয় বিষয়াবলি

  • জাতীয় পাখি- দোয়েল
  • জাতীয় পশু- রয়েল বেঙ্গল টাইগার
  • জাতীয় মাছ- ইলিশ
  • জাতীয় ফুল- শাপলা
  • জাতীয় ফল- কাঠাল
  • জাতীয় বৃক্ষ- আম গাছ
  • জাতীয় বন- সুন্দরবন
  • জাতীয় মসজিদ- বায়তুল মোকারম
  • জাতীয় স্টেডিয়াম- বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, গুলিস্তান, ঢাকা
  • জাতীয় গ্রন্থাগার- শেরে বাংলা নগর, ঢাকা
  • জাতীয় পার্ক- ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, গাজীপুর
  • জাতীয় জাদুঘর- শাহাবাগ, ঢাকা
  • জাতীয় খেলা- কাবাডি

পদক-পুরস্কার

জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ  অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তিবিশেষ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে কয়েক ধরনের পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। উল্লখযোগ্য কিছু পুরষ্কার নিম্নরুপ-

স্বাধীনতা পদক

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার। পুরস্কারটি প্রবর্তন করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। প্রথম স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয় ১৯৭৭ সালে। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে (২৬শে মার্চ) এই পদক প্রদান করা হয়ে আসছে। জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে (সরকার কর্তৃক নির্ধারিত) গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যক্তির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। সর্বোচ্চ ১০ জনকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।

একুশে পদক

বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়। একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে ১৯৭৬ সাল থেকে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে এই পদকের প্রবর্তন করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। প্রথম একুশে পদক প্রদান করা হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে।

বাংলা একাডেমী পুরস্কার

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৬০ সালে। বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতি বছর এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ পুরস্কার শুধু ব্যক্তিবিশেষকে দেওয়া হয়।

শিশু একাডেমী পুরস্কার

শিশুসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বছরে একজন সাহিত্যিককে এ পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পুরস্কার চালু করা হয়। মরণোত্তর পুরস্কার হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়ার বিধান নেই।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার

চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সরকার ব্যক্তিবিশেষকে এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে  জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৭৬ সালে।

জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার

ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয়। এটি প্রবর্তন করা হয় ১৯৭৬ সালে।

রবীন্দ্র পুরস্কার

বাংলা একাডেমী ২০১০ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীতের চর্চা এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতের বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

নজরুল পুরস্কার

নজরুল ইনস্টিটিউট সম্প্রতি নজরুল পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। কবি নজরুল ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা এবং নজরুলগীতির বিকাশে অবদানের জন্য প্রতিবছর ব্যক্তিবিশেষকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য

45

বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলি

বিগত সালের প্রশ্ন

1 / 16

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মনোগ্রামে কয়টি তারকা রয়েছে?

2 / 16

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মনোগ্রামের ডিজাইনার কে?

3 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের ইংরেজি অনুবাদক কে-

4 / 16

'আমার সোনার বাংলা' গানটির সুরকার কে?

5 / 16

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'আমার সোনার বাংলা' কবিতার প্রথম কত লাইন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতরূপে নেয়া হয়েছে?

6 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার মাঝের লাল বৃত্তটির ব্যাসার্ধ হবে পতাকার দৈর্ঘ্যে-

7 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় পশু কোনটি?

8 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা কবে গৃহীত হয়?

9 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত কত?

10 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও মাঝের লালবৃত্তের ব্যাসার্ধের অনুপাত যথাক্রমে-

11 / 16

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীকের ডিজাইনার কে?

12 / 16

জাতীয় পতাকা বিধি কোন সালে প্রণীত?

13 / 16

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে কয়টি তারকা আছে?

14 / 16

নিচের কোনটি বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ?

15 / 16

বাংলাদেশের রণ সঙ্গীতের রচয়িতা কে?

16 / 16

"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" গাণটি রচনার প্রেক্ষাপট কি ছিল?

Your score is

The average score is 75%

0%

Rate this quiz

আরও পোস্ট

বাংলাদেশ বিষয়াবলি আর্কাইভ

Leave a Reply