বাংলা সাহিত্যের আধুনিক পর্ব শুরু হয়েছিল আঠারো শতকের প্রারম্ভে (১৮০১-বর্তমান)। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সাহিত্যে আধুনিক যুগের সূচনা হয় ১৮৬০ সালে মাইকেল মধুসুদন দত্তের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে। আত্মচেতনা, জাতীয়তাবোধ ও মানুষের প্রাধান্যভিত্তিক রচনা আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য। গদ্য সাহিত্যকে এ যুগের প্রতিভূ বলা হয়। এ যুগে গদ্যনির্ভর সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনের ফলে সাহিত্যে প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, নাটক প্রভৃতি সৃষ্ট হয়ে বাংলা সাহিত্যকে বৈচিত্র্যমুখী ও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
গদ্য সাহিত্য
মানুষের কথ্য ভাষার লেখ্যরূপ হলো গদ্য। ১৫৫৫ সালে আসামের রাজাকে লেখা কোচবিহারের রাজার একটি পত্রকে বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রাথমিক নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া ১৭৪৩ সালে লিবসন থেকে প্রকাশিত ঢাকার ভূষণার জমিদার পুত্র দোম অ্যান্টনিও রচিত
( ) বাংলা গদ্যসাহিত্য রচনার প্রাথমিক প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি বাঙালির লেখা প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ। এছাড়া –- বাংলা কথ্য ভাষার আদিগ্রন্থ – মনোএল দা আসসুম্পসাঁওয়ের রোমান লিপিতে লেখা ‘কৃপার শাস্ত্রে অর্থভেদ’
- বাংলা ভাষায় মুদ্রিত প্রথম গদ্যগ্রন্থ – মিশন সমাচার (১৮০০)
আঠারো শতকে বাঙ্গালা গদ্যের বিকাশ সূচীত হলেও মূলত সাহিত্যে গদ্যের সূচনা হয় উনিশ শতকে। এসময় প্রমথ চৌধুরী বাংলা গদ্যকে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন।
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ
কলকাতার লালবাজরে ফোর্ট উইলিয়াম কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে ৪ মে, ১৮০০ খ্রি. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ওয়েলেসলি। ইংরেজ অফিসারদের দেশীয় ভাষা শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ কলেজে বাংলা বিভাগ চালু হয় ১৮০১ খ্রি.। বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন উইলিয়াম কেরি।
১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং একই সময় রাজা রামমোহন রায়ের সাহিত্যিক প্রভাবে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের গুরুত্ব হ্রাস পেতে থাকে। ১৮৫৪ সালে লর্ড ডালহৌসির সময় কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে বাংলা গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ এর অবদান স্বরণীয়। ১৮০১-১৮১৫ সাল পর্যন্ত মোট ৮ জন লেখক ১৩ টি বাংলা গদ্য পুস্তক রচনা করেন। এই ৮ জনের অধিকাংশই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাথে যুক্ত ছিলেন।
উইলিয়াম কেরী রাচিত গ্রন্থ-
- কথোপকথন – কথ্যরীতির প্রথম নিদর্শন
- ইতিহাসমালা – প্রথম বাংলা গল্পগুচ্ছ
- এ গ্রামার অব দ্যা বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ – ব্যাকরণ গ্রন্থ
উইলিয়াম কেরিকে বাংলা শেখান রামরাম বসু। এজন্য তাকে কেরি সাহেবের মুন্সি বলা হয়। রামরাম বসুর সাহিত্যকর্ম-
- রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র – বঙ্গালির লেখা ও বাংলা অক্ষরে মুদ্রিত প্রথম গ্রন্থ। এটি গদ্যে রচিত প্রথম জীবনচরিত।
- লিপিমালা – প্রথম বাংলা পত্রসাহিত্য
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাথে সম্পৃক্ত একজন উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার। কলেজের পণ্ডিতদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি পুস্তক রচনা করেন। তার সাহিত্যকর্ম- ‘বত্রিশ সিংহাসন’, ‘হিতোপদেশ’, ‘রাজাবলী’, ‘বেদান্তচন্দ্রিকা’ ইত্যাদি।
উল্লেখ্য গদ্য সাহিত্যের প্রাথমিক নিদর্শন কোচবিহারের রাজার একটি পত্র, কিন্তু কথ্যরীতির প্রথম নিদর্শন ‘কথোপকথন’।
শ্রীরামপুর মিশন ও বাংলা ছাপাখানা
শ্রীরামপুর মিশন ভারতে খ্রিস্টানদের প্রথম প্রচার সংঘ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ১৮০০ সালে মিশনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মিশনটি ১৮৪৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পূর্বে বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গোয়ায় (ভারত) ১৪৯৮ সালে উপমহাদেশের প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ছিল পর্তুগিজ ভাষার মুদ্রণযন্ত্র। ১৭৭৭ সালে জেমস্ হিকি নামক ব্যক্তি বাংলা মুদ্রয়ণ ব্যবসা শুরু করেন। ১৮০০ সালে শ্রীরামপুর মিশনে মুদ্রয়ণ যন্ত্র স্থাপন করা হয়। এসময় ইংরেজ কর্মচারীদের বাংলা শেখানোর বই ও অভিধান ছাপানো এবং বাইবেল অনুবাদ করার জন্য বাংলা অক্ষর তৈরির প্রয়োজন দেখা দেয়। ইংরেজ কর্মচারী চার্লস উইলকিন্স প্রথম বাংলা অক্ষর নকশা করেন এবং তার নকশা অনুযায়ী অক্ষর খোদাই করেন পঞ্চানন কর্মকার। উইলকিন্সকে বাংলা মুদ্রাক্ষরের জনক বলা হয়। বাংলাদেশের প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৭ সালে রংপুরে। এর নাম ছিল ‘বার্তাবহ যন্ত্র’ নামে। ঢাকার প্রথম ছাপাখানার নাম ‘বাংলা প্রেস’ (১৮৬০)। এখান থেকে দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক প্রকাশিত হয়।
শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত –
- গ্রন্থ: ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’
- পত্রিকা: ‘দিকদর্শন’, ‘সমাচার দর্পন’
হিন্দু কলেজ ও ইয়াংবেঙ্গল
রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ২০ জানুয়ারি ১৮১৭ সালে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৫৫ সালে ‘প্রেসিডেন্সি কলেজ’ এ কলেজের স্থলাভিসিক্ত হয়। হিন্দু কলেজের একজন শিক্ষক ছিলেন হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও। তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে হিন্দু কলেজে যোগদান করেন। ১৮২৮ সালে তাকে হিন্দু কলেজ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তিনি ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনের প্রবক্তা ছিলেন। ইয়াংবেঙ্গল হলো ইংরেজি ভাবধারাপুস্ট বাঙালি যুবক। হিন্দু সমাজের বিদ্যমান সামাজিক ও ধর্মীয় কাঠামো এঁদেরকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল। প্রাচীন ও ক্ষয়িষ্ণু প্রথা তথা ধর্মীয় সংস্কার ও সামাজিক শৃঙ্খলমুক্তির প্রয়াস থেকে ইয়ংবেঙ্গলের সদস্যরা মদ্যপানে আনন্দবোধ করতেন। ইয়াং বেঙ্গলের উল্লেখযোগ্য সদস্য হলেন- কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ, রামতনু লাহিড়ি, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, অমৃতলাল মিত্র, প্যারীচাঁদ মিত্র, কালিপ্রসাদ ঘোষ প্রমুখ। মাইকেল মধুসুদন দত্ত-ও ডিরোজিওর আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। পরবর্তীতে ইয়াং বেঙ্গল গোষ্ঠীর সদস্যরা ডিয়োজিওর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে তিনি নব্য ইয়াংবেঙ্গলদের অনাচার ও উশৃঙ্খলাকে কটাক্ষ করে রচনা করেন তার বিখ্যাত প্রহসন ‘একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৫৯)’।
ইয়াংবেঙ্গলদের মুখপত্র / পত্রিকা – এনকোয়ার, জ্ঞানান্বেষণ
মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি ও ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ
১৮৬৩ সালে মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা নওয়াব আবদুল লতিফ। ব্রিটিশ শাসনামলে মুসলমানরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। সাহিত্যে মুসলমানদের প্রতিষ্ঠা লাভের উদ্দ্যেশে এটি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯২৬ সালে ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। সংস্থাটির মাধ্যমে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে মুসলমানরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। সেখান থেকে মুক্তি লাভের জন্য ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজের মাধ্যমে এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। সংগঠনের মুখপত্র ছিল শিখা পত্রিকা। শিখা পত্রিকার শ্লোগান – ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজের অন্যতম লেখক ছিলেন – কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হোসেন, কাজী মোতাহার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি
১৭৮৪ সালে কলকাতায় দি এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্স। সংস্থাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল এশিয়ার বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পদ্ধতিগত গবেষণা করা। দেশভাগের পর ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ‘এশিয়াটিক সোসাইটি অফ পাকিস্তান’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ’।
প্রতিষ্ঠাকালীন –
সভাপতি: আবদুল হামিদ এবং সাধারণ সম্পাদক: ড. আহমদ হাসান দানী
বাংলাদেশ এশিয়টিক সোসাইটির উদ্দ্যোগে ২০০৩ সালে ১৪ খণ্ডে ‘বাংলাডিপিয়া’ নামক জ্ঞানকোষ প্রকাশিত হয়। বাংলাপিডিয়ার প্রধান সম্পাদক ড. সিরাজুল ইসলাম।
বাংলা একাডেমি
১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক বর্ধমান হাউজে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর উদ্বোধন করেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার। বাংলা একডেমিকে জাতির মননের প্রতীক বলা হয়। ‘The Bengali Academy Act-1957’ এর মাধ্যমে একাডেমিটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৬০ সালে ‘বাংলা একাডেমি পুরষ্কার’ চালু করা হয়।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে ‘একাডেমী’ বানানের পরিবর্তে ‘একাডেমি’ বানান চালু করা হয়
বাংলা একাডেমির প্রকাশিত পত্রিকা ৬ টি। যথা-
পত্রিকার নাম | প্রকাশের ধরন | বিষয় |
---|---|---|
বাংলা একাডেমি পত্রিকা | ত্রৈমাসিক | গবেষণামূলক |
উত্তরাধিকার | মাসিক | সৃজনশীল সাহিত্য |
ধান শালিকের দেশ | ত্রৈমাসিক | কিশোর সাহিত্য |
বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা | ষাণ্মাষিক | বিজ্ঞান বিষয়ক |
বার্তা | মাসিক | মুখপত্র |
বাংলা একাডেমি জার্নাল | ষাণ্মাষিক | – |
এক নজরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠান | প্রতিষ্ঠা | অবদান |
---|---|---|
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ | ১৮০০ সালে | ১৮০১-১৮১৫ সাল পর্যন্ত মোট ৮ জন লেখক ১৩ টি বাংলা গদ্য পুস্তক রচনা করেন। এই ৮ জনের অধিকাংশই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাথে যুক্ত ছিলেন। |
শ্রীরামপুর মিশন | ১৮০০ সালে | এখানে প্রথম বাংলা ছাপাখানা স্থাপন করা হয়। রামায়ন, মহাভারত সহ বিভিন্ন সাহিত্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয় শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানা থেকে। |
হিন্দু কলেজ | ১৮১৭ সালে | ‘ইয়াংবেঙ্গল’ আত্মপ্রকাশ করে ও বিকশিত হয় এই কলেজের শিক্ষক ডিরোজিও উদ্দ্যেগে। বিখ্যাত কিছু সাহিত্যিক ইয়াংবেঙ্গলের সাথে যুক্ত ছিলেন। |
মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি | ১৮৬৩ সালে | সাহিত্য মুসলমানদের প্রতিষ্ঠা লাভের ক্ষেত্রে অবদান রাখে। |
ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ | ১৯২৬ সালে | মুসলমান সমাজের জীবন ও চিন্তাধারার গতির পরিবর্তন সাধনে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত করে। |
বাংলাদেশ এশিয়টিক সোসাইটি | ১৯৫২ সালে | বাংলাপিডিয়া প্রকাশ করে। |
বাংলা একাডেমি | ১৯৫৫ সালে | বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা, গবেষণা ও প্রচারে বৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। |
উল্লেখযোগ্য রচনা
উপন্যাস
উপন্যাস হলো গদ্যে লেখা দীর্ঘাবয়ব বর্ণনাত্মক কথাসাহিত্য। কথাসাহিত্য বলতে উপন্যাস ও ছোটগল্পকে বোঝায়। ছোটগল্পে কোনো চরিত্রের একটিমাত্র দিকের প্রতিফলন ঘটে আর উপন্যাসে ব্যক্তি জীবনের বৃহত্তম পরিসরের পরিচয় রূপ লাভ করে। বাংলা উপন্যাস রচনার সূচনা হয় উনিশ শতকের প্রথমার্ধে।
বাংলা উপন্যাস লেখার প্রথম প্রচেষ্টা চালান ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার রচিত উপন্যাস – ‘কলিকাতা কমলালয় (১৮২৩)’, ‘নববাবু বিলাস’, ‘নববিবি বিলাস’। হ্যানা ক্যাথরিন ম্যালন্স রচিত ‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ (১৮৫২)’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস। বাঙালি রচিত প্রথম উপন্যাস হল ‘আলালের ঘরের দুলাল (১৮৫৭)’। এটি রচনা করেন প্যারীচাঁদ ঠাকুর। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায় রচিত ‘দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫)’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস।
বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস-
লেখক | উপন্যাস |
---|---|
প্যারীচাঁদ মিত্র | আলালের ঘরের দুলাল: বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস |
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায় | দুর্গেশনন্দিনী: বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী, কৃষ্ণকান্তের উইল, ইন্দিরা, যুগলাঙ্গুরীয়, দেবীচৌধুরাণী, রাধারানী, সীতারাম, রজনী, চন্দ্রশেখর, আনন্দমঠ, রাজসিংহ, বিষবৃক্ষ। |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | বৌঠাকুরানীর হাট: প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস, চোখের বালি, গোরা, ঘরে-বাইরে, যোগাযোগ, শেষের কবিতা, দুইবোন, চার অধ্যায়, মালঞ্চ, চতুরঙ্গ, রাজর্ষি, নৌকাডুবি। |
শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় | বড়দিদি: প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস, শ্রীকান্ত: আত্নজীবনীমূলক উপন্যাস, গৃহদাহ, পথের দাবী, পল্লীসমাজ, দেবদাস, চরিত্রহীন, নববিধান, দত্তা, দেনা পাওনা, পরিণীতা, বিরাজ বৌ, পন্ডিত মশাই, শেষ প্রশ্ন, শেষের পরিচয়। |
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, অনুবর্তন, ইছামতি, অশনি সংকেত, দেবযান, চাঁদের পাহাড় ইত্যাদি। |
কালীপ্রসাদ সিংহ | হুতোম প্যঁচার নকশা |
ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় | |
রমেশচন্দ্র দত্ত | বঙ্গবিজেতা, মধবীকঙ্কন, জীবনপ্রভাত, জীবনসন্ধ্যা |
নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী | |
নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন | আনোয়ারা |
মোহাম্মদ মোজাম্মল হক | |
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | ধাত্রীদেবতা, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম, একটি কালো মেয়ের কাহিনী, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, ছবি, অরণ্যবহ্নি, চৈতালী ঘূর্ণি, জলসাঘর |
কাজী নজরুল ইসলাম | বাঁধনহারা, কুহেলিকা, মৃত্যুক্ষুধা |
মানিক বন্দোপাধ্যায় | জননী, পদ্মা নদীর মাঝি, শহরতলী, পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, অমৃত্যস্য পুত্রা, সোনার চেয়ে দামি, স্বাধীনতার স্বাদ |
আনোয়ার পাশা | রাইফেল রোটি আওরাত |
সেলিনা হোসেন | হাঙর নদী গ্রেনেড, পোকামাকড়ের ঘরবসতি, নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি |
দিলারা হোসেন | ঘর মন ও জানালা |
শওকত ওসমান | জননী, জাহান্নাম হতে বিদায়, দুই সৈনিক, নেকড়ে অরণ্য, জলাঙ্গী, বনি আদম, ক্রীতদাসের হাসি ইত্যাদি |
শওকত আলী | প্রদোষে প্রাকৃতজন, ওয়ারিশ |
অন্নদাশঙ্কর রায় | |
আবু জাফর শাসুদ্দীন | পদ্মা মেঘনা যমুনা, দেয়াল |
স্বর্ণকুমারী দেবী | দীপনির্বাণ, মেবার রাজ |
রাজিয়া খান | বটতলার উপন্যাস |
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় | আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম, |
সত্যেন সেন | , |
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় | বৈতালিক, |
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ে | ঘুণপোকা |
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী | বেণের মেয়ে |
হাসন রাজা | লোকে সিন্ধু |
হুমায়ুন কবির | নদী ও নারী |
অদ্বৈত মল্লবর্মণ | তিতাস একটি নদীর নাম (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক) |
রশীদ করিম | উত্তম পুরষ, প্রসন্ন পাষাণ |
ইমদাদুল হক মিলন | সারাবেলা, নদী উপাখ্যান |
মাহমুদুল হক | কালো বরফ (৪৬ এর দাঙ্গা ও ‘৪৭ এর দেশভাগের উপর লেখা) |
নাটক
নাটক হল দৃশ্যকাব্য। নট ধাতু থেকে ‘নাটক’ শব্দটি এসেছে; নট অর্থ নৃত্য। কাহিনী, চরিত্র, ঘটনা সমাবেশ ও সংলাপ নাটকের চারটি মূল অঙ্গ। বাংলা নাটককে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- রসপ্রধান: ট্রাজেডি, মেলোড্রামা, কমেডি, ফার্স/প্রহসন
- রূপপ্রধান: গীতিনাট্য, নৃত্যনাট্য
১৭৫৩ সালে কলকাতার লালবাজারে প্রথম রঙ্গমঞ্চ তৈরি হয়। ১৭৯৫ সালে হেরাসিম লেবেডেফ প্রথম The Disguise ও Love is the best Doctor নামে দুটি নাটক বাংলায় অনুবাদ করে অভিনয় করান। ১৮৩১ সালে প্রথম বাংলা নাটক মঞ্চে অভিনীত হয়। উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো নিম্নরূপ-
নাট্যকার | নাটক |
---|---|
তারাচরণ শিকদার | |
যোগেন্দ্রচন্দ্র গুপ্ত | |
রামনারায়ণ তর্করত্ন | , বেণী সংহার, যেমন কর্ম তেমন ফল (প্রহসন), উভয়সঙ্কট (প্রহসন) |
মাইকেল মধুসুদন দত্ত | , , , । |
গিরিশচন্দ্র ঘোষ | , , সীতার বনবাস, সীতাহরণ, তপোবন, |
দীনবন্ধু মিত্র | নীলদর্পণ, , , , নবীন তপস্বিনী, , লীলাবতী |
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় | ঐতিহাসিক নাটক: , , প্রতাপসিংহ, দুর্গাদাস, তারাবাঈ, তাপসী, সিংহলবিজয়, মেবার পতন। সামাজিক নাটক: পরপারে, বঙ্গনারী নকশা ও প্রহসন: কল্কি অবতার, একঘরে, আনন্দ বিদায় অন্যান্য: সীতা, চন্দ্রগুপ্ত, পাষাণী |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | বাল্মীকি প্রতিভা, রূদ্রচণ্ড, ডাকঘর, কালের যাত্রা, তাসের দেশ, প্রকৃতির প্রতিশোধ, রক্তকবরী, বিদায় অভিশাপ, বিসর্জন, চিরকুমার সভা, বৈকুণ্ঠের খাতা, বসন্ত |
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | ষোড়শী, বিজয়া, বিরাজ বউ |
কাজী নজরুল ইসলাম | , আলেয়া, মধুমালা, পুতুলের বিয়ে |
সৈয়দ ওয়ালউল্লাহ | উজানে মৃত্যু, বহিপীর, তরঙ্গভঙ্গ, সুড়ঙ্গ |
মুনীর চৌধুরী | , , মানুষ, দণ্ডকারণ্য, নষ্ট ছেলে, চিঠি, পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য |
অমৃতলাল বসু | বিবাহ বিভ্রাট, চোরের উপর বাটপারি, কৃপণের ধন (সবগুলো প্রহসন) |
সিকান্দার আবু জাফর | সিরাজ উদ্ দৌলা, মহাকবি আলাওল |
মমতাজ উদ্দিন আহমেদ | স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা |
মামুনুর রশীদ | গিনিপিগ, ওরা কদম আলী, ইবলিশ |
আব্দুল্লাহ আল মামুন | সুবচন নির্বাসনে, কোকিলারা |
ক্ষীরোদপ্রসাদ | আলিবাবা |
সাঈদ আহমেদ | কালবেলা |
জিয়া হায়দার | এলেবেলে |
ইব্রাহিম খলিল | স্পেনবিজয়ী মুসা |
প্রবন্ধ
বাংলা প্রবন্ধ ধারার প্রবর্তক রাজা রামমোহন রায়। বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রবন্ধসাহিত্যে প্রথম জীবনচরিত ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’, রচনা করেন রামরাম বসু।
প্রাবন্ধিক | প্রবন্ধ |
---|---|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | কমলাকান্তের দপ্তর, সাম্য, লোকরহস্য, বিজ্ঞানরহস্য, কৃষ্ণচরিত, মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | বিবিধপ্রসঙ্গ, কালান্তর, পঞ্চভূত, বিচিত্রপ্রবন্ধ, মানুষের ধর্ম, সভ্যতার সংকট |
কাজী নজরুল ইসলাম | তুর্কি মহিলার ঘোমটা খোলা, রাজবন্দীর জবানবন্দি, যুগবাণী, রুদ্রমঙ্গল, দুর্দিনের যাত্রী |
শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় | নারীর মূল্য, তরুণের বিদ্রোহ |
আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ | পদ্মাবতী, সত্যনারায়ণের পুঁথি, গোরক্ষ বিজয় |
আব্দুল্লাহ আল মুতী | সাগরের রহস্যপুরী, এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে, রহস্যের শেষ নেই, আবিষ্কারের নেশায় |
বদরুদ্দীন ওমর | সংস্কৃতির সংকট, সাম্প্রদায়িকতা, সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা |
মুহম্মদ আবদুল হাই | ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব, সাহিত্য ও সংস্কৃতি, ভাষা ও সাহিত্য |
ড. মুহাম্মদ এনামুল হক | আরকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য, মনীষা মঞ্জুষা |
ড. আহমদ শরীফ | বিচিত্র চিন্তা, স্বদেশ অন্বেষা, যুগ যন্ত্রণা, স্বদেশ চিন্তা, বিশ শতকের বাঙালি |
গোপাল হালদার | সংস্কৃতির রূপান্তর, বাঙালির সংস্কৃতির রূপ |
আবদুস সাত্তার | অরণ্য জনপদে, অরণ্য সংস্কৃতি |
মোতাহার হোসের চৌধুরি | সংস্কৃতির কথা, সভ্যতা |
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস | সংস্কৃতির ভাঙা সেতু |
গুলবদন বেগম | হুমায়ুন নামা |
জগদীশচন্দ্র বসু | অব্যক্ত |
ড. আনিসুজ্জামান | স্বরূপের সন্ধানে |
যতীন সরকার | সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা |
নীহারঞ্জন রায় | বাঙ্গালীর ইতিহাস |
নীরদচন্দ্র চৌধুরী | আত্মঘাতী বাঙালী |
কাব্য ও কবিতা
কবি | কাব্য |
---|---|
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | কবি-কাহিনী, বনফুল, সোনার তরী, কড়ি ও কোমল, চিত্রা, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য, খেয়া, গীতাঞ্জলি, বলাকা, পূরবী, শেষ লেখা, মানসী, চৈতালী, কল্পনা, সেঁজুতি, ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলি, পুনশ্চ |
কাজী নজরুল ইসলাম | অগ্নিবীণা, বিষের বাশি, সন্ধ্যা, প্রলয়শিখা, দোলনচাঁপা, সঞ্চিতা, মরুভাস্কর, চিত্তনামা, সিন্ধু হিন্দোল, চন্দ্রবিন্দু, ঝিঙেফুল, সাতভাই চম্পা, সর্বহারা, সাম্যবাদী, ভাঙার গান, ঝড়, ফণিমনসা, জিঞ্জির, ছায়ানট, পূবের হাওয়া, চক্রবাক |
সুকুমার রায় | আবোল-তাবোল, হ-য-ব-র-ল, খাই খাই |
শহীদ কাদরী | উত্তরাধিকার, তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা |
বিষ্ণু দে | উর্বশী ও আর্টেমিস, চোরাবালি, সাত ভাই চম্পা |
দাউদ হায়দার | জন্মই আমার আজন্ম পাপ |
নবীনচন্দ্র সেন | পলাশীর যুদ্ধ |
প্রেমেন্দ্র মিত্র | প্রথমা |
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় | চিন্তাতরঙ্গিনী |
সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার | মহিলা |
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত | বেণু ও বীণা, কুহু ও কেকা |
কামিনী রায় | আলো ও ছায়া, দীপ ও ধূপ |
যতীন্দ্রমোহন বাগচী | অপরাজিতা, নীহারিকা |
বন্দে আলী মিয়া | ময়নামতির চর |
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | মরীচিকা, মরুশিখা, মরুমায়া |
গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ও কবি –
কবি | কবিতা |
---|---|
মোহিতলাল মজুমদার | বেদুঈন |
যতীন্দ্রমোহন বাগচী | কাজলা দিদি |
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | ডাক হরকরা |
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত | উত্তম ও অধম |
ছোটগল্প
ছোটগল্প আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ফসল। এতে স্বল্প ভাষায় ও স্বল্প পরিসরে জীবনের ক্ষণ্ডাংশের বর্ণনা থাকে। আকারে ছোট হলেই তাকে ছোটগল্প বলা হয় না; কারণ ছোটগল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো “অল্প কথায় অধিক ভাব ব্যক্ত করতে হবে”। ছোটগল্পে উপন্যাসের বিস্তার থাকে না, কিন্তু ভাবের ব্যাপকতা থাকে। উপন্যাস পড়ে পাঠক পরিতৃপ্তি লাভ করে, কিন্তু ছোটগল্প থেকে শুধুমাত্র ভাবের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। বাংলা ছোটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছোটগল্প সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ তার ‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় বলেছেন –
অন্তরে অতৃপ্তি রবে, সাঙ্গ করি মনে হবে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বর্ষাযাপন)
শেষ হয়েও হইল না শেষ।
ছোটগল্পের কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
- ক্ষুদ্রায়তনের মধ্যে বৃহতের ইঙ্গিত থাকবে।
- শুরু ও উপসংহার হবে নাটকীয়।
- বিষয়বস্ত্ত সাধারণত স্থান, কাল ও ঘটনার ঐক্য মেনে চলবে।
- মানবজীবনের কোনো একটি বিশেষ মুহূর্ত, ভাব বা চরিত্রের একটি বিশেষ দিক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
- বাহুল্য বর্জনের মাধ্যমে গল্পটি হয়ে উঠবে রসঘন।
- রূপক বা প্রতীকের মাধ্যমে অব্যক্ত কোনো বিষয়ের ইঙ্গিত।
- সর্বোপরি গল্পসমাপ্তির পরেও পাঠকের মনের মধ্যে এর গুঞ্জরণ চলতে থাকবে।
লেখক | ছোটগল্প |
---|---|
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | প্রেম সম্পর্কিত: শেষ কথা, সমাপ্তি, নষ্টনীড়, মধ্যবর্তিনী, একরাত্রি সমাজ সম্পর্কিত: ছুটি, হৈমন্তী, পোস্ট-মাস্টার, দেনাপাওনা, খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন, কাবুলিওয়ালা অতিপ্রাকৃত: ক্ষুধিত পাষাণ, জীবিত ও মৃত, কঙ্কাল, নিশীথে |
শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় | মন্দির, মহেশ, মেজদিদি, মামলার ফল, বিলাসী |
কাজী নজরুল ইসলাম | বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা, পদ্মগোখরা |
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় | অতসী মামী, প্রাগৈতিহাসিক, সরীসৃপ, ফেরিওয়ালা, সমুদ্রের স্বাদ, বৌ, আজকাল পরশুর গল্প, ছোট বকুলপুরের যাত্রী |
দক্ষিণারঞ্জণ মিত্র | ঠাকুমার ঝুলি, ঠাকুরদাদার ঝুলি, ঠানদিদির থলে, দাদা মহাশয়ের থলে |
শওকত ওসমান | জন্ম যদি তব বঙ্গে, ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী, পিজরাপোল, প্রস্তর ফলক |
হাসান আজিজুল হক | আমরা অপেক্ষা করছি, নামহীন গোত্রহীন, আত্মজা ও একটি করবী গাছ, শীতের অরণ্য, জীবন ঘষে আগুন |
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় | দেশী ও বিলাতী, গল্পাঞ্জলি, ষোড়শী, গল্পবীথি |
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | রসকলি, ডাকহরকরা |
শাহেদ আলী | জিবরাইলের ডানা, একই সমতলে |
রাজশেখর বসু | গড্ডলিকা |
সুবোধ ঘোষ | ফসিল |
সরদার জয়েনউদ্দিন | বেলা ব্যানার্জির প্রেম |
আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন | নিষিদ্ধ শহর, |
সোমেন চন্দ | ইঁদুর |
প্রেমেন্দ্র মিত্র | মহানগর |
শাহরিয়ার কবির | একাত্তরের যিশু |
মহাকাব্য
দীর্ঘ ও বিস্তৃত কবিতা বিশেষ। সাধারণত বীর রসাত্মক আখ্যানকাব্যকে মহাকাব্য বলে। বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য হল মাইকেল মধুসুদন দত্ত রচিত মেঘনাথবধ কাব্য।
মহাকাব্য | রচয়িতা/অনুবাদক |
---|---|
রামায়ণ | বাল্মীকি |
মহাভারত | বেদব্যাস |
শাহনামা | মোজাম্মেল হক |
মেঘনাথবধ | মাইকেল মধুসুদন দত্ত |
রৈবতক কুরুক্ষেত্র প্রভাস | নবীনচন্দ্র সেন |
স্পেন বিজয় কাব্য | সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী |
বৃত্রসংহার | হেমচন্দ্রবন্ধ্যোপাধ্যায় |
পৃথ্বীরাজ শিবাজী | যোগীন্দ্রনাথ বসু |
কাশেমবধ কাব্য | হামিদ আলী |
মহাশ্মশান | কায়কোবাদ |
বিখ্যাত গান
গান | রচনা | সুর |
---|---|---|
ধন ধান্য পুষ্পে ভরা | দ্বিজেন্দ্রলাল রায় | দ্বিজেন্দ্রলাল রায় |
আমার সোনার বাংলা … বাংলার মাটি বাংলার জল … ও আমার দেশের মাটি … আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে … | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
দুর্গমগিরি কান্তার মরু … | কাজী নজরুল ইসলাম | কাজী নজরুল ইসলাম |
মাগো ভাবনা কেনো … | গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার | হেমন্ত মুখোপাধ্যায় |
শুন একটি মুজিবের … | গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার | অংশুমান রায় |
দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা … সোনা সোনা সোনা লোকে বলে … | আবদুল লতিফ | আবদুল লতিফ |
রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি … | আব্দুল কাশেম সন্দীপ | সুজেয় শ্যাম |
জন্ম আমার ধন্য হল | সাধন গুহ | সাধন গুহ |
বিচারপতি তোমার বিচার … | সলিল চৌধুরী | সলিল চৌধুরী |
জয় বাংলা বাংলার জয় … | গাজী মাজহারুল আনোয়ার | আনোয়ার পারভেজ |
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি … | আবদুল গাফফার চৌধুরী | আলতাফ মাহমুদ |
সালাম সালাম হাজার সালাম … | মুহম্মদ আবদুল জব্বার | ফজলে খুদা |
তথ্য
- কবর নাটক রচনা করেছেন মুনীর চৌধুরি, কবর কবিতা রচনা করেছেন জসীমউদ্দীন।
- সাম্য বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ এবং সাম্যবাদী কাজী নজরুলের কাব্যগ্রন্থ।
- কালান্তর রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ, কালবেলা সাঈদ আহমেদের নাটক।
- কমলাকান্তের জবানবন্দি – বঙ্কিমচন্দ্র, রাজবন্দির জবানবন্দি – কাজী নজরুল।