গোবিন্দপুরের জমিদার নগেন্দ্রনাথ দত্ত কলকাতা যাত্রার পথে অনাথা বালিকা কুন্দনন্দিনীর অসহায়ত্ব দেখে তাকে সাথে নেয়। নগেন্দ্রনাথ কুন্দকে কলকাতায় তাঁর ভগিনী কমলমণির কাছে রেখে এসেছিল; কিন্তু পরে স্ত্রী সূর্যমুখীর অনুরোধে তাঁকে গোবিন্দপুরে নিয়ে আসে। সূর্যমুখীর দূরসম্পর্কীয় ভাই তারাচরণের সঙ্গে কুন্দের বিবাহ হয়। কিন্তু বিবাহের কিছুকাল পরেই তারাচরণের মৃত্যু হলে কুন্দ বিধবা হয়। এরপর নগেন্দ্রনাথ কুন্দের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরে, কুন্দও নগেন্দ্রের প্রতি অনুরক্তা হয়।
একসময় সূর্যমুখী নগেন্দ্র ও কুন্দর বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে। সে কমলমণিকে চিঠিতে নগেন্দ্রনাথের কুন্দর প্রতি অনুরাগের কথা জানায়। এটা জানার পর কমলমণি কুন্দকে কলকাতায় নিয়ে আসতে চায়। কুন্দ আত্মহত্যা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।
অন্যদিকে দেবীপুরের দুশ্চরিত্র জমিদার দেবেন্দ্রও কুন্দের প্রতি আকৃষ্ট হয়। হরিদাসী বৈষ্ণবীর ভেক ধরে এসে সে কুন্দকে কুপ্রস্তাব দেয়। হীরা দাসী এই ব্যাপারে খোজ করে সূর্যমুখীকে হরিদাসীর প্রকৃত স্বরূপ সম্পর্কে অবহিত করে। হরিদাসী বৈষ্ণবীর ঘটনায় সূর্যমুখী কুন্দকে অপমান করে। এতে কুন্দ গৃহত্যাগ করে। তার অনুপস্থিতিতে নগেন্দ্র অস্থির হয়ে ওঠে এবং ঘটনার জন্য সূর্যমুখীর প্রতি রুষ্ট হয়। সেও গৃহত্যাগের সংকল্প করে। এমতাবস্থায় কুন্দ ঘরে ফিরে আসে। সূর্যমুখী নিজ উদ্যোগে স্বামীর সঙ্গে কুন্দের বিবাহ দেয়, কিন্তু তারপর নিজে গৃহত্যাগ করে। নগেন্দ্রনাথ তাঁকে খুঁজতে সব জায়গায় লোক পাঠায়, নিজেও বেরিয়ে পড়ে। গৃহত্যাগী সূর্যমুখী ঘুরতে ঘুরতে একসময় রোগাক্রান্ত হয়ে পরে। শেষে এক ব্রহ্মচারীর শুশ্রুষায় সুস্থ হয়ে ওঠে। ব্রহ্মচারীই নগেন্দ্রনাথকে সংবাদ পাঠায়। উভয়ের পুনর্মিলন ঘটে।
নগেন্দ্রনাথ ঘরে ফিরে কুন্দর সঙ্গে দেখা করে না। এতে বিরহে কুন্দ বিষপান করে (প্রকৃতপক্ষে হীরা দাসী কুন্দকে বিষ পান করায়)। পরদিন সকালে সূর্যমুখী যখন কুন্দকে দেখতে আসে, তখন তার অন্তিম সময় আসন্ন। পরিশেষে নগেন্দ্রনাথের পায়ে মাথা রেখে কুন্দ ইহলোক ত্যাগ করে।
উল্লেখযোগ্য চরিত্র: নগেন্দ্র, সূর্যমুখী, কুন্দনন্দিনী, হীরা।