মৃত্যুক্ষুধা (সংক্ষিপ্ত কাহিনী)

Estimated Reading Time: 6 Minutes

উপন্যাস, কাজী নজরুল ইসলাম

মৃৎশিল্পের কেন্দ্রভূমি কৃষ্ণনগরের চাঁদসড়ক। এ সড়কের বস্তি এলাকায় বাস করে এক দরিদ্র মুসলিম পরিবার। রোগগ্রস্ত বৃদ্ধ মা, তিন বিধবা পুত্রবধু, দেবর প্যাঁকালে। পরিবারের প্রায় ডজনখানেক সন্তানের ভরণপোষণের ভার আঠারো-উনিশ বছরের প্যাঁকালের ওপর ন্যাস্ত। কুর্শি খিস্টান হলেও প্যাঁকালের ভালবাসার জন্য ব্যাকুল। সেজন্য বিধবা-রূপসী ভ্রাতৃজায়া মেজ-বৌয়ের বিবাহের প্রস্তাব তার কাছে অতি তুচ্ছ। কুর্শিকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় প্যাঁকালে ধর্মান্তরিত হয়। উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশের শুরু হয় আনসার-রুবি প্রসঙ্গে। সমাজকর্মী, দেশপ্রেমিক, আত্মত্যাগী ও সংসার-বিরাগী আনসার এসে আশ্রয় নিল লতিফা ওরফে বুচির বাসায়। লতিফার স্বামী স্থানীয় কোর্টের নাজির। পরে কৃষ্ণনগরের জেলা-ম্যাজিস্ট্রেটের তরুণী কন্যা সদ্য-বিধবা রুবির সঙ্গে শৈশব প্রণয়ের স্মৃতি আনসারের মনে উদয় হয়। যদিও রুবি-আনসারের পুনরায় সাক্ষাৎ ঘটেছে উপন্যাসের শেষাংশে। মাঝখানে কয়েক বছর দু’জনের সাক্ষাৎ হয়নি। কারণ রুবির অমতে তার বিয়ে হয়েছিল অর্থলোভী এক যুবকের সঙ্গে। তাদের সংসার টিকে ছিল মাত্র একমাস। বাইরের সাজসজ্জা ও আচরণ রুবির বিধবাসুলভ হলেও মনে প্রাণে সে আনসারকেই স্বামী বলে মানে। আনসার রাজবন্দী হয়ে রেঙ্গুনে চলে যায়, সেখানে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হবার আশায় ওয়ালটেয়ারে যায়। রুবি ওই সংবাদ শোনামাত্রই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে পা বাড়াতে দ্বিধা করে না। আনসারকে রোগমুক্ত করতে রুবি অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে নিরাময় করতে অসমর্থ হয় এবং আনসার মারা যায়। এদিকে আনসারকে সেবাযত্নের ফলে একই ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে রুবি মারা যায়। ওদিকে অভাবের তাড়নায় মেজবৌ সন্তান ফেলে খ্রিস্টান হয় এবং বরিশালে নিজের জীবন কাটিয়ে দেবার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তবে বাদ সাধে সন্তানেরা। তার ছেলেটি মারা যায়। মেজ-বৌকে ফিরে আসতে হয় বস্তিজীবনে। কিন্তু মেজ-বৌ মিশনারী মেম-সাহেবদের বহু অনুরোধেও আর ফিরে যায়নি আবার তৌবা করে মুসলমানও হয়নি। প্যাঁকালেকে খান বাহাদুর সাহেব কুড়ি টাকার চাকুরি দেওয়ায় প্যাঁকালে কুর্শিকে নিয়ে মুসলমান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়।

সূত্র: বাংলাপিডিয়া

Leave a Reply