উপন্যাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রজলক্ষ্মীর সন্তান মহেন্দ্র মেডিকেল ছাত্র৷ মাতাকে অনেক ভক্তি করে সে৷ মহেন্দ্রর শুভাকাঙ্খী বন্ধু বিহারী৷ মাতৃহীন বিহারী রাজলক্ষ্মীর মাতৃস্নেহে বড় হয়৷ বিহারী ধীর-স্থির নিশ্চুপ ধরণের৷ কোন ধরণের দুঃখ কষ্টের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নাই ৷ ভাল মন্দ তার নিজস্ব ব্যাপার৷
আশালতা পিতৃমাতৃহীনা দরিদ্র মেয়ে যে জেঠার কাছে মানুষ হয়েছে ৷ মাসী অন্নপূর্ণার ইচ্ছা মহেন্দের সাথেই বিয়ে হবে বোনঝি আশালতার। নানা ঘটনাবলির মধ্যদিয়ে শেষ পর্যন্ত সে বিয়ে হয় এবং সুখে থাকে আশালতা।
বিনোদিনী দরিদ্র ঘরের মেয়ে হলেও সে শিক্ষিত আধুনিকা, অপরুপা ও আকর্ষক নারী। বিয়ের পরপরই তার স্বামী মারা যায়৷ সে গ্রামে ফিরে যায় এবং তার সাথে রাজলক্ষ্মীর দেখা হয়। মহেন্দ্রর সাথে একসময় বিনোদিনীর বিয়ের কথা হয়, কিন্তু সেই বিয়ে আর হয়নি। বরং আশালতার সাথে বিহারীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল মহেন্দ্রের ইচ্ছায়। তবে হঠাৎ করেই ঘুরে যায় উপন্যাসের গতি৷
বন্ধু বিহারির সাথে প্রথমে বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও আশালতার বিয়ে হয় মহেন্দ্রর সাথে। আশালতা ছিল একদমই অবুঝ ও অ-সংসারী প্রকৃতির। মহেন্দ্র একসময় উপলব্ধি করে স্ত্রী আশালতার বান্ধবী বিনোদিনীই ছিল তার জন্য উপযুক্ত। মহেন্দ্র বিনোদিনীর দিকে আকৃষ্ট হয়। এতে হিংসায় জ্বলতে থাকে আশালতা। ঘটনার প্রেক্ষাপটে একসময় বাড়ি ছেড়ে চলে যায় বিহারী। বিনোদিনীও বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় অজানার উদ্দেশ্যে।
অর্থ্যাৎ বিহারী একসময় ভালোবাসতো আশালতাকে, আবার এখন তার মনে হয় বিনোদিনীকেও। বিহারী আশাকে ভালবাসত এটা জানার পর আশা হয়ে যায় বিনোদিনীর চোখের বালি ৷ বিনোদিনীও ভালোবাসা রাখে বিহারীর জন্য। আবার মহেন্দ্র আকৃষ্ট হয় বিনোদিনীর দিকে। এভাবে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তির মাধ্যমে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে ৷
পরিশেষে পুনরায় মিলিত হয় মহেন্দ্র এবং আশালতা ৷
(সংগৃহিত ও পরিমার্জিত)