১৭০২ সালে ইংল্যান্ড থেকে প্রথম দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১৭৮০ সালে জেমস অগাস্টাস হিকি স্থানীয় ইংরেজদের জন্য “বেঙ্গল গেজেট” বা “ক্যালকাটা জেনারেল অ্যাডভার্টাইজার” নামে একটি ইংরেজি সাপ্তাহিক প্রকাশ করেন। ১৮১৮ সালে মিশনারিদের উদ্যোগে শ্রীরামপুর থেকে বাংলা সাময়িকপত্র “দিগদর্শন” প্রকাশিত হয়। একই বছর প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র “সমাচার দর্পণ” প্রকাশিত হয়। এছাড়া ঐ বছরই রাজা রামমোহন রায়ের সহায়তায় গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য “বাঙ্গাল গেজেট” নামক বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। এভাবে বাংলা সংবাদপত্র ধিরে ধিরে সমৃদ্ধি লাভ করে।
এক নজরে প্রথম প্রকাশ-
- প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট (১৭৮০), কিন্তু বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাময়িকপত্র দিকদর্শন (১৮১৮), প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা / প্রথম সংবাদপত্র সমাচার দর্পণ (১৮১৮) এবং প্রথম দৈনিক পত্রিকা সংবাদ প্রভাকর (১৮৩৯)।
- জেমস অগাস্টাস হিকি সম্পাদিত ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট (১৭৮০)। অপরদিকে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য সম্পাদিত বাঙ্গাল গেজেট (১৮১৮) হল বাঙালি কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র। উল্লেখ্য বাঙ্গাল গেজেট পত্রিকার কোন কপি পাওয়া যায়নি। তবে ভবানীচরণ ব্যানার্জী, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত প্রমুখের লেখায় পত্রিকাটির অস্তিত্বের কথা জানা যায়।
- বাংলাদেশ থেকে প্রথম প্রকাশিত সংবাদপত্র রংপুর বার্তাবহ (১৮৪৭), ঢাকা থেকে প্রথম প্রকাশিত সংবাদপত্র ঢাকা প্রকাশ (১৮৬১)।
- কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত পত্রিকা গ্রামবার্তা প্রকাশিকা (১৮৬৩), কোহিনুর (১৮৯৮) ও পূর্বাশা (১৯৩২)।
সময়রেখা
বেঙ্গল গেজেট
সম্পাদক: জেমস অগাস্টাস হিকি।
ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র। এটি ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র ছিল।
দিকদর্শন, সমাচার দর্পন ও বাঙ্গাল গেজেট
দিকদর্শন ও সমাচার দর্পন পত্রিকার সম্পাদক: জন ক্লার্ক মার্শম্যান
দিকদর্শন বাংলা ভাষার প্রথম সাময়িকপত্র এবং সমাচার দর্পন বাংলায় প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র।
বাঙ্গাল গেজেট পত্রিকার সম্পাদক: গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।
এটি বাঙ্গালি কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা।
সম্বাদ কৌমুদী ও ব্রাক্ষণসেবধি
সম্পাদক: রামমোহন রায়
সংবাদ প্রভাকর, জ্ঞানান্বেষণ
সম্পাদক: যুগসন্ধিক্ষণের কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
১৮৩১ সালে এটি প্রথমে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হত। পরবর্তীতে ১৮৩৯ সালে বাংলা ভাষার প্রথম দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়।
জ্ঞানান্বেষণ পত্রিকার সম্পাদক: দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়।
পত্রিকাটি ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর মুখপত্র ছিল।
তত্ত্ববোধিনী
সম্পাদক: অক্ষয়কুমার দত্ত।
রংপুর বার্তাবহ
সম্পাদক: গুরুচরণ রায়।
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা।
ঢাকা প্রকাশ
সম্পাদক: কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র।
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা
সম্পাদক: কাঙাল হরিনাথ।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র। কুষ্টিয়ার আরেকটি পত্রিকা হল ইয়াকুব আলী সম্পাদিত কোহিনুর (১৮৯৮)।
বঙ্গদর্শন
সম্পাদক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ভারতী
সম্পাদক: দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় ভাই।
সুধাকর
সম্পাদক: শেখ আব্দুর রহিম। তার সম্পাদিত আরও দুটি পত্রিকা হল – মিহির (১৮৯২) ও হাফেজ (১৮৯৭)।
সবুজপত্র
সম্পাদক: প্রমথ চৌধুরী
বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতি প্রবর্তনে এ পত্রিকা ভূমিকা রাখে।
সওগত
সম্পাদক: মোহাম্মাদ নাসিরউদ্দীন
মোসলেম ভারত, আঙুর
মোসলেম ভারত পত্রিকার সম্পাদক মোজাম্মেল হক এবং আঙুর পত্রিকার সম্পাদক মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। আঙুর একটি কিশোর পত্রিকা।
ধূমকেতু
সম্পাদক: কাজী নজরুল ইসলাম
এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। এ পত্রিকাকে আশির্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন- “কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন”। পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো। নজরুলের রাজনৈতিক কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে এ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ফলে পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।
তার অন্য দুটি পত্রিকা হল – লাঙ্গল (১৯২৫)ও নবযুগ (১৯৪১)
কল্লোল
সম্পাদক: দিনেশচন্দ্র দাশ
কালিকলম
সম্পাদক: মুরলীধর বসু, শৈলেজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও প্রেমেন্দ্র মিত্র
মাসিক মোহাম্মাদী, শিখা
মাসিক মোহাম্মাদী পত্রিকার সম্পাদক: মোঃ আকরাম খাঁ।
শিখা পত্রিকার সম্পাদক আবুল হোসেন। এটি বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের মুখপত্র ছিল।
পূর্বাশা
সম্পাদক: সঞ্জয় ভট্টাচার্য
পত্রকাটি কুমিল্লা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়।
বেগম
সম্পাদক: বেগম রোকেয়া, নূরজাহান বেগম।
নারী সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা।
সমকাল
সম্পাদক: সিকান্দার আবু জাফর