সার্কুলার ইকোনোমি এমন এক অর্থনৈতিক মডেল যেখানে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। এতে তুলনামূলক কম প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সম্পদের অপচয় কমিয়ে আনা এবং বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার ইকোনমিক মডেলে সম্পদ বারবার চক্রাকারে ব্যবহার হতে থাকে। অর্থ্যাৎ এতে খনি থেকে সম্পদ আহরণ কমিয়ে দিয়ে জোর তাগিদ দেওয়া হয় রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারের ওপর। সার্কুলার অর্থনীতিতে এমন সব পণ্য উৎপাদন করার হয় যা সহজেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যাবে বা সহজেই দূরে সরিয়ে ফেলা যাবে। ফলে বর্জ্য হ্রাস পাবে। সার্কুলার ইকোনমিতে কেউ কোনো পণ্যের মালিকানা রাখবে না; বরং তা ঋণ হিসেবে নেবে। যেমন: একজন ভোক্তা কোন লাইটের জন্য দাম দেবে না। বরং তা ঋণ হিসেবে নেবে। পণ্য ব্যবহার শেষ হলে ভোক্তা তা ফেরত দেবে এবং কোম্পানিগুলো পুরাতন পণ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলে তা আবার ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করবে। অর্থ্যাৎ ভোক্তা সারাজীবনের জন্য কোন নির্দিষ্ট পণ্যের (যেমন: লাইটের) মালিক হচ্ছেন না। তিনি শুধু ব্যবহারযোগ্য সীমার সময়ের জন্য তার নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছেন। তিনি শুধু বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছেন যা পূনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। এভাবেই সার্কুলার ইকোনমিতে একটি পণ্য হয়ে উঠবে সেবা। ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে উৎসাহিত হবে।
বৃত্তাকার অর্থনীতি তিনটি নীতির উপর ভিত্তি করে চালিত:
- বর্জ্য এবং দূষণ দূর করা।
- পণ্য এবং উপকরণ চক্রাকারে সংবাহিত করা (সর্বোচ্চ পরিমাণে)।
- প্রকৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা।
বাস্তবায়নে অসুবিধা
সার্কুলার ইকোনমির সমালোচনার তিনটি বিষয় হতে পারে:
- আধুনিক পণ্য রিসাইকেল করা খুবই জটিল।
- জ্বালানিসম্পদ রিসাইকেল করা প্রায় অসম্ভব এবং পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রযুক্তি এখনও উন্নত নয়।
- বৈশ্বিক সম্পদের ব্যবহার বছরের পর বছর বেড়ে চলায় ব্যবহৃত দ্রব্যের যে পরিমাণ রিসাইকেল করা হয়, সব সময়ই তা প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের চেয়ে কম হবে। এই ঘাটতি পূরণে অব্যাহতভাবে আরো অধিক পরিমাণে সম্পদ বের করতে হবে যা সার্কুলার ইকোনমিকে অসম্ভব করে তুলতে পারে।