অঙ্ক ও সংখ্যা

Estimated Reading Time: 13 Minutes

গণনার কাজে যে সব প্রতীক ব্যবহার করা হয় যেমন ০, ১, ২, ৩ ইত্যাদি হল একেকটি অঙ্ক। ০ থেকে ৯ -এই প্রতীকগুলোকে দশমিক পদ্ধতির অঙ্ক বলা হয়। আর এক বা একাধিক অঙ্ক মিলে গঠিত হয় সংখ্যা। কেবলমাত্র একটি প্রতীক যেমন ‘৭’ একটি অঙ্ক এবং একটি সংখ্যাও, কিন্তু একাধিক অঙ্কের (যেমন  ৪ ও ৭) সমন্নয়ে গঠিত ‘৪৭’ শুধুই একটি সংখ্যা। অর্থ্যাৎ ০ থেকে ৯ প্রতীকগুলো একইসাথে অঙ্ক এবং সংখ্যা । অঙ্ক গুলো (০-৯) কেবল মাত্র হিসেবের সময়ই সংখ্যা হতে পারে, অন্যথায় সেগুলো কেবল অঙ্ক।

১-৯ কে বলা হয় স্বার্থক অঙ্ক। ‘০’ এককভাবে মানের অস্তিত্বহীনতা প্রকাশ করে কিন্তু অন্যান্য সংখ্যার পিছনে বসে তাদের যুত পরিচয় প্রদান করে। ০ কে বলে সংখ্যার অভাবজ্ঞাপক অঙ্ক বা সহকারী অঙ্ক। এখানে উল্লেখ্য, গণিতে ‘শূন্য’-র আবিষ্কার ভারতবর্ষে হয়েছিলো। আর্যভট, বরাহমিহির প্রমুখ বিজ্ঞানীদের রচিত গাণিতিক ও জ্যোতিষীয় রচনায় ‘০’ সহ দশ সংখ্যার অঙ্কপাতন পদ্ধতির বহুল ব্যবহার দেখা যায়।

কোন সার্থক অঙ্ককে আলাদাভাবে লিখলে তা যে সংখ্যা প্রকাশ করে তা ঔ অঙ্কের স্বকীয় মান। একাধিক অঙ্ক একসাথে বা পাশাপাশি লিখলে সেটি যে সংখ্যা প্রকাশ করে তাতে সংখ্যায় ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর মান তার অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। কোন সার্থক অঙ্ক তার অবস্থানের জন্য যে মান প্রকাশ করে তাকে ঔ অঙ্কের স্থানীয় মান বলে।

উদাহরণ: ‘৭’ একটি সার্থক অঙ্ক। একে এককভাবে লিখলেও সেটি একটি সংখ্যা এবং তার স্থানীয় মান হল ‘সাত’। আবার ‘৭’ ও ‘৫’ পাশাপাশি বসে ‘৭৫’ সংখ্যা গঠন করলে সেখানে ‘৭’ ও ‘৫’ এর স্বকীয় মান যথাক্রমে ‘সাত’ এবং ‘পাঁচ’, কিন্তু ‘৭৫’ এ ‘৭’ দশক স্থানীয় সংখ্যা হওয়ায় এর স্থানীয় মান ৭০ আর ‘৫’ একক স্থানীয় সংখ্যা হওযায় এর স্থানীয় মান ‘পাঁচ’। অনুরুপভাবে ‘৭১৪৫’ সংখ্যাটিতে ৭ এর স্থানীয় মান ৭০০০, ১ এর স্থানীয় মান ১০০, ৪ এর স্থানীয় মান ৪০ এবং ৫ এর স্থানীয় মান ৫।

আবার একই সংখ্যার স্থান পরির্বতনের ফলে স্থানীয় মানের পরিবর্তন হলেও স্বকীয় মান একই থাকে। যেমন- ‘১৮’ সংখ্যায় ১ এ স্থানীয় মান ১০ এবং ৮ এ স্থানীয় মান ‘আট’ আবার ‘৮১’ সংখ্যায় ৮ এ স্থানীয় মান ৮০ আর ১ এ স্থানীয় মান ‘এক’। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই ১ ও ৮ ও স্বকীয় মান যথাক্রমে ‘এক’ এবং ‘আট’।

কিছু গানিতিক রোমান প্রতীকের অর্থ-

  • I = 1, II = 2, III = 3, IV = 4, V = 5, VI = 6, VII = 7, VIII = 8, IX = 9, X = 10
  • L = 50
  • C = 100
  • D = 500
  • M = 1000

উদাহরণ: LVII = 57

ভাজ্য, ভাজক ও ভাগশেষ
  • ভাজ্য: যাকে ভাগ করা হয় তাই ভাজ্য।
  • ভাজক: যার দ্বারা ভাগ করা হয় তাই ভাজক।
  • ভাগফল: ভাগ করার পর যে ফল পাওয়া যায় তাই ভাগফল।
  • ভাগশেষ: ভাগ করার পর যা উদৃত থাকে যাকে আর ভাগ করা যায় না বা ভাগ করলে ভাগফল আর পূর্ণ সংখ্যা থাকে না তাই ভাগশেষ।

বিভাজ্যতা

কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা অপর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হবে কিনা তার নির্দিষ্ট কিছু সূত্র নিচে দেওয়া হলঃ-

২ দ্বারা বিভাজ্য সংখ্যা: কোন সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য হতে হলে এর একক স্থানীয় সংখ্যা ০ বা জোড় হতে হবে। যেমনঃ ৮৮৮, সংখ্যাটি ২ দ্বারা বিভাজ্য কারণ এর একক স্থানীয় সংখ্যা জোড়।

৪ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য হতে হলে এর একক ও দশক স্থানের অঙ্ক দুটি দ্বারা গঠিত সংখ্যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য হতে হবে। যেমনঃ ৪১৮৮, সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য কারণ ৮৮ সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য।

৫ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যা ৫ দ্বারা বিভাজ্য হতে হলে এর একক স্থানীয় সংখ্যা ০ বা ৫ হতে হবে। যেমনঃ ৪২৫, সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য কারণ এর একক স্থানীয় সংখ্যা ৫।

৩ দ্বারা বিভাজ্য: কোন সংখ্যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য হতে হলে এর অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হতে হবে। যেমনঃ ৩৩৩, সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য কারণ এর অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৩+৩+৩=৯, ৩ দ্বারা বিভাজ্য।

This quiz is no longer available.

Leave a Reply