ওয়াটারলুর যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের সম্রাট হওয়ার পর ইউরোপের অন্যান্য দেশ দখল করতে শুরু করেন। ফলে ১৮১৪ সালে প্রুশিয়া, অস্ট্রিয়াসহ বেশ কিছু দেশের সেনাবাহিনী ফ্রান্স আক্রমণ করে এবং নেপোলিয়নকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেন্ট এলবা দ্বীপে নির্বাসন দেয়। নেপোলিয়নের অনুপস্থিতিতে ষোড়শ লুইকে ফ্রান্সের ক্ষমতায় বসায় মিত্রশক্তি; কিন্তু ফরাসি জনগণ লুইকে গ্রহণ করেনি। নেপোলিয়ন এ সুযোগ কাজে লাগান এবং আবার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। ফলে মিত্রশক্তি পুনরায় সম্মিলিতভাবে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে। এ জোটের মধ্যে ছিল আর্থার ওয়েলেসলির (ডিউক অব ওয়েলিংটন) অধীনস্ত ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ও গাবার্ড ভন ব্লুচারের অধীনস্ত প্রুশিয়ান সেনাবাহিনী। ১৮১৫ সালের ১৬ জুন নেপোলিয়ন প্রুশিয়ান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধে প্রুশিয়ান সেনাবাহিনী পরাস্ত হয়। তবে নেপোলিয়ন প্রুশিয়ান সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করতে পারেননি। প্রায় তিরিশ হাজার প্রুশিয়ান সেনা পালিয়ে যায়। ১৮১৫ সালের ১৮ জুন নেপোলিয়ন প্রায় ৭২ হাজার সৈন্য নিয়ে ডিউক অব ওয়েলিংটন আর্থার ওয়েলেসলির নেতৃত্বে ৬৮ হাজার সৈন্যবিশিষ্ট ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হন। এর আগের দিন ভারি বর্ষণ হওয়ায় নেপোলিয়ন মাটি শুষ্ক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এর মধ্যে ৩০ হাজার দলছুট প্রুশিয়ান সৈন্য ব্রিটিশদের সঙ্গে যোগ দেয়। ওয়াটারলুতে শুরু হয় তুমুলযুদ্ধ, যা ইতিহাসে ওয়াটারলুর যুদ্ধ নামে পরিচিত। শুরুরদিকে নেপোলিয়ন শক্ত প্রতিরোধ গড়ে, কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ডিউক অব ওয়েলিংটনের কাছে নেপোলিয়ন পরাজিত হযন এবং তাকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বসিত করা হয়।