ফরাসি বিপ্লবের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৪ জুলাই ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে উত্তপ্ত শ্রমিক, কারিগর, গ্রাম ও শহরের গরিব মানুষেরা খাদ্যের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাজার নির্দেশে মিছিলের ওপর অশ্বারোহী বাহিনী চালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একসময় প্যারিসের সামরিক অধিনায়ক স্বসৈন্যে সরে দাঁড়ালে রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ জনতার হাতে চলে যায়। রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়, লুট করা হয় আগ্নেয়াস্ত্রের দোকান। উত্তেজিত জনতা আরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতীক বাস্তিল কারাদুর্গে আক্রমণ করে। উন্মত্ত জনতা কারাগারের বন্দীদের মুক্ত করে এবং কারাগারের অধিকর্তা দ্যলুনেকে হত্যা করে।

‘নাগরিক গার্ড’ নামক একটি সামরিক বাহিনী রাজতন্ত্রের অহংকার বাস্তিল দুর্গ পতনে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছিল। এ দুর্গটি ছিল ঐতিহ্যগতভাবে ফ্রান্সের রাজতন্ত্রের প্রতীক। দুর্গে রাজবন্দী এবং বিপুলসংখ্যক রাজকীয় সৈন্য অবস্থান করত। কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর বিকালের দিকে বিদ্রোহীরা দুর্গটি ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ফলে পুরো রাজতন্ত্রের পতন হয়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৯৮ জন বিদ্রোহী এবং ৮ জন রাজকীয় সিপাহি নিহত হন। রাজা ষোড়শ লুই ও তার স্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। আধুনিক ফ্রান্সের জনগণ এ দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করে।